১৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস (০৮-০৫-২০২৪)

৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

ঢাকাসহ দেশের ১৬ জেলার উপর দিয়ে আজ রোজ বুধবার (০৮-০৫-২০২৪) সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতও হতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়া অফিস (আজ বুধবার (০৮-০৫-২০২৪) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর গুলোর জন্য দেয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস)।

আবহাওয়া অফিসের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায়, পাবনা, রংপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, খুলনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট এবং কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে ঘন বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। যে কারণে এই সব এলাকার নদীবন্দর গুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর আর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গাসহ চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বৃষ্টি বা বজ্রসহবৃষ্টি হতে পারে এবং কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তি ভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

তবে কি তাপপ্রবাহ এবারের মতো বিদায় নিলো ?

টানা কয়েক সপ্তাহ দাবদাহের পর কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলছে, এই বৃষ্টিপাতের ধারা আগামী এক সপ্তাহেরও বেশি বহমান থাকতে পারে। এতে করে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি তাপপ্রবাহ এবারের মতো বিদায় নিলো?

মঙ্গলবার (০৭ মে ২০২৪) সকালে আবহাওয়া অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যান্ত দেশের সব বিভাগের উপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে এবং কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত ভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এমনকি বর্ধিত ৫ দিন বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যর্থ থাকতে পারে।

বৃষ্টি যে কয়দিন থাকবে তাপপ্রবাহ সেই কয়দিন কম থাকতে পারে। তবে বৃষ্টি হওয়া স্বত্বেও কিছু কিছু জায়গায় মৃদু ধরনের তাপপ্রবাহ থাকতে পারে। সর্বোপরি বলতে গেলে সপ্তাহ খানেক মোটামুটি আবহাওয়া এরকমই থাকবে। চলতি বছরে তাপপ্রবাহ অতটা প্রকট আকারে আর ফিরে আসবে না বলে ধারণা করছেন আবহাওয়া অধিদফতর। তবে চলতি মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে কোনও কোনও স্থানে হালকা থেকে মাঝারি আকারের তাপপ্রবাহ দেখা দিতে পারে। তবে তা আবশ্যয় আগের মতো আর প্রচণ্ড হবে না।

ফেনীতে গতকাল মঙ্গলবার (০৭ মে ২০২৪ তারিখ) সকাল ৬টা পর্যন্ত মোট ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ১৩০ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়। এ সময় দেশের আরও অনেক জায়গায় অতি ভারি বর্ষণ বা ঘন বর্ষণ হয়। এই দিন বান্দরবানে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু ধরনের তাপপ্রবাহ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশমিত হতে পারে। এছাড়াও আগামী কয়েক দিন সারা দেশে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত আবস্থায় থাকতে পারে।

গত কয়েক দিনের বৃষ্টি কি স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক?

টানা এক মাসের তাপপ্রবাহে জন-জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। তবে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কম বেশি দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ কিছুটা হলেও কমেছে। বৃষ্টির সাথে সাথে পড়ছে প্রচুর পরিমান শিল। খুব অল্প সময়ের বৃষ্টিতেও পড়ছে বজ্র। সাধারণ সময়ের তুলনায় এবছর বজ্রপাত ও শিল পড়ার হার অনেক বেশি। তবে কি এই বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি তার সাথে শিল পড়া এটা কি স্বাভাবিক?

প্রায় এক মাস ধরে টানা তাপপ্রবাহ ছিল যা দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকাজুড়ে বয়ে গিয়েছিল। দেশে যে তাপপ্রবাহ বয়ে গিয়েছে তা কোনো ভাবেই স্বাভাবিক ছিল না এটি অস্বাভাবিক ছিল। সাধারণত আমরা দেখেছি এপ্রিল মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে কমবেশি বৃষ্টি হয়। কিন্তু এবছর এপ্রিল মাসে শুধু মাত্র সিলেটে সামান্য পরিমানে বৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ তাপপ্রবাহের পর ২ই মে থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়। তবে এই বৃষ্টি সঠিক সময়ে হয়নি, এই বৃষ্টিটা অনেকটাই অস্বাভাবিক।

ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে ফলে সাধারন মানুষ পড়েছে ভোগান্তিতে

তাপপ্রবাহের অস্বস্তির মধ্যে সোমবার (০৬-০৫-২০২৪) চট্টগ্রামে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে করে পরিবেশ শীতল হলেও দেখা দিয়েছে আরেক বিপত্তি। টানা বৃষ্টিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ায় রাস্তার উপর অনেক গাছপালা ভেঙে পড়েছে তার সাথে অনেক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটিও উপরে পরেছে। চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসী।

নন্দনকানন এলাকায় দুপুর আড়াইটার দিকে আকাশ কালো হয়ে বৃষ্টি নামে। এতোটায় অন্ধকার হয় যে হেডলাইট জ্বালিয়েই যানবাহন গুলোকে চলাচল করতে হয়। বৃষ্টিতে ডুবেছে সমস্ত সড়ক, যে কারণে সড়কের দুই পাশের উঁচু স্থান দিয়ে মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তায় পানি জমাতে যানবহনের চাকা প্রায় পানির নিচে।

জীবনের তাগিদে পানি ভেঙে বাবা তার সন্তানকে কোলে নিয়ে রাস্তা পাড় হচ্ছেন। বৃষ্টির মধ্যে হাঁটুপানি ভেঙে যে যার গন্তব্যে এগিয়ে চলেছেন। রাস্তার জমা পানি শারীরিক প্রতিবন্ধীদের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top