আজ দুপুর একটার মধ্যে তীব্র ঝড়ের পূর্বাভাস

তীব্র ঝড়ের পূর্বাভাস

আবহাওয়া অফিস আশঙ্কা করছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে আজ তীব্র বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বজ্রসহ বৃষ্টি ও শিলা বৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করছেন।

আবহাওয়াবিদ অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের উপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম বা পশ্চিম দিক থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত বা শিলাবৃষ্টি হতে পারে। যে কারণে এসব এলাকার নদীবন্দর গুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া কক্সবাজার ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম বা পশ্চিম দিক থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সথে বৃষ্টিপাত বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। যে কারণে এসব এলাকার নদীবন্দর গুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের বেশিরভাগ জায়গাসহ চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ গভীরবৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সথে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে বলে ধারণা করছেন।

আজ ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজধানীতে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি (রবিবার রাতে)

রবিবার (০৫ মে ২০২৪) বিকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়া অধিদফতরের এক সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছিল, আগামী ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ আগামী তিন দিনের মধ্যে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, ঢাকা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দমকা হাওয়াসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।

শহরের উষ্ণতম দিনে, পিচ গলা রোদ্দুরে বৃষ্টি হতে পারে তার পূর্বাভাস আবহাওয়া অধিদপ্তর রোববার সকালেই দিয়েছিলেন। সেই পূর্বাভাস সত্য প্রমাণ করে রাজধানীতে ঝরল প্রবল বৃষ্টি। শুধু বৃষ্টিই নয় তার সাথে ছিল প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে হওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৫৯ কিলোমিটার। রাজধানীতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতে চলতি মাসে এ ধরনের বজ্রঝড় বা কালবৈশাখী এটাই প্রথম।

বিক্ষিপ্ত বিদ্যুৎ চমকানোর পাশাপাশি কোথাও কোথাও পড়ছে প্রচন্ড শিলা। ঢাকার কোথাও হয়েছে হালকা ঝড় বৃষ্টি আবার কোথাও হয়েছে ভারী বৃষ্টি আবার কোথায় হয়েছে ভারী শিলাবৃষ্টি। ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টিতে কমে এসেছে তাপমাত্রাও। জানা গেছে ঢাকার বিভান্ন স্থানে এখনও ধূলিঝড় হচ্ছে। আকাশ মেঘলা আকাশে মেঘের গুড়ুম গুড়ুম ডাক।

আজ ০৬ মে ২০২৪ (সোমবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এছাড়াও এই সময়ে সারা দেশে রাত দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, রাজধানীতে আজকেও বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন। শুধু রাজধানীই নয় দেশের সব বিভাগেই কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে আজ।

গতকালকের শিলাবৃষ্টিতে কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে

টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে গতকালের রাতে রাজধানীতে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। রাত ৯টার পর থেকে বইতে থাকে ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি।

রবিবার (০৫ মে ২০২৪) দুপুর আড়াইটার দিকে হবিগঞ্জে হঠাৎ করে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়। এতে সেখানকার ঘরবাড়িসহ পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের মাধ্যমে জানা গেছে, দু-একদিনের মধ্যে যেসব জমির ধান কাটার কথা ছিল সেসব জমির ধান এখন জমিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। দুঃখের সাথে জানান সারা বছরের পরিশ্রম ১৫ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে শেষ করে দিয়ে গেছে।

শুধু ধানের জমিই নয় সব ধরনের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি সেখানকার এক রিকশাচালক মাধ্যমে জানা যায়, “শিলাবৃষ্টি তার মাথায় পড়ার কারণে অনেকে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন।”

১৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে টিনের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোববার (০৫ মে ২০২৪) সুনামগঞ্জের স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টার দিকে দোয়ারাবাজার ‍উপজেলার আকাশ কালো করে আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড় তার সাথে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। মাত্র ১৫ মিনিটের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কাঁচা ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের নতুন বাশতলা, বাশতলা গ্রাম, মৌলারপাড়, চৌধুরী পাড়া, কলোনি, ঝুমগাও, পেকপাড়া গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, টিনের বাড়ি, মসজিদ ও ফসলের খেত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাশতলা এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে অসংখ্য টিনের তৈরি বাড়ির চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সব বাড়ির ভেতর থেকে আকাশ দেখা যাচ্ছে এখন। বাড়িগুলো বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। শিলাবৃষ্টিতে নিম্নআয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছেন।

টিন দিয়ে তৈরি বাজারের প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে মালামাল ভিজে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। একএকটি শিলার ওজন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম হবে।

রাজধানী ঢাকারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, গাছ-পালাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে সিলেটে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিভাগের বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

Advertisement

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top