ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় বা ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে চন্দনের তুলনা হয় না। নারীদের রূপচর্চায় চন্দনের ব্যবহার আদ্যিকাল থেকেই চলে আসছে। নামী-দামি প্রসাধনীতে এখনও চন্দনের ব্যবহার করা হয়। চন্দন ত্বককে ব্রণ ও ফুসকুড়ির হাত থেকে রক্ষা করার সাথে সাথে ত্বককে ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। চন্দনে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। ত্বকে কোন প্রকার সংক্রমণ হলে চন্দনের প্রলেপ ব্যবহার করলে প্রদাহ দূর হয়ে যায়।
চন্দন পাউডার ব্যবহারের নিয়ম
চন্দন পাউডার আমাদের ত্বকের কোন ক্ষতি করে না এটি একটি নাচারাল বিউটি প্রোডাক্ট। নিচে চন্দন পাউডার ব্যবহারের নিয়ম তুলে ধরা হলো-
- ত্বকের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে চন্দন, হলুদ ও দই / দুধের সথে মিশিয়ে বানিয়ে ফেলুন একটা পেস্ট। স্নানের আগে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পেস্টটি মুখে লাগিয়ে আধ ঘণ্টা আপেক্ষা করুন। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
- ব্রণের সমস্যায়:
- অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যায় চন্দনের সাথে গোলাপ জল ও বিউলির ডালের প্যাক বানিয়ে আধ ঘণ্টা মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মূখ দূয়ে ফেলুন। তবে একবার ব্যবহারে ম্যাজিক হবে না, ধৈর্য নিয়ে নিয়ম করে ব্যবহার করতে হবে।
- চন্দনের সাথে নিম পাউডার পানি দিয়ে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর ধীরে ধীরে মুখে লাগিয়ে নিন। ব্রণের সমস্যায় এই প্যাকটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
- ত্বককে আর্দ্র রাখতে চন্দন পাউডারে সামান্য গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে প্রতিদিন নিয়ম করে মুখে লাগান। যাদের ত্বক সারা বছরই তেলতেলে থাকে তারা স্নানের আগে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে দশ মিনিট এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- ১/২ চা চামচ চন্দন, ১/২ চা চামচ টমেটো পেষ্ট, ১/২ চা চামচ মুলতানি মাটি ও সামান্য গোলাপজল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। তারপর মুখে ও গলায় লাগিয়ে ১০ – ১৫ মিনিট রেখে শুকিয়ে নিন। শুকিয়ে যাওয়ার পর বরফ পানিতে তুলো ভিজিয়ে নিয়ে সেই তুলো দিয়ে মুখ ও গলা ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। মুখের অতিরিক্ত তেল ও ময়লা পরিষ্কার করতে এই প্যাক খুবই কার্যকরী।
- যাদের মুখ থেকে খুব চামড়া উঠার সমস্যা রয়েছে তারা চন্দন পাউডার সাথে বেসন ও জল / দুধের সাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন (নোট: যাদের চামড়া উঠার সাথে সাথে ত্বক খুব তৈলাক্ত তারা দুধ ব্যবহার করবেন না আর যাদের ড্রাই স্কিন তারা দুধ ব্যবহার করবেন)।
- মুখের দাগ এবং পোড়া ভাব কমাতে এক চামচ চন্দন পাউডারের সাথে সামান্য অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে বানিয়ে ফেলুন একটি পেষ্ট। এরপর তা ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফলুন।
- ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করতে ১ চা চামচ চন্দন, ১/৪ চা চামচ নারকেল তেল, ১/৪ চা চামচ আমন্ড অয়েল ও সামান্য গোলাপ জল মিশেয়ে একটি প্যাকটি বানিয়ে নিন। এরপর গলায় ও মুখে প্যাকটি ভালো করে লাগিয়ে ২০ মিনিট আপেক্ষা করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করার সাথে সাথে ময়েশ্চার ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
- স্কিনের গ্লো বাড়াতে ১ চা চামচ চন্দন গুঁড়ো, ১ চা চামচ কমলার ছালের পেস্ট ও ১/২ চা চামচ গোলাপজল এক সাথে মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে ফেলুন। এটি মুখে ও গলায় মেখে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
চন্দন পাউডার এর উপকারিতা
চন্দনের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। চন্দনের ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে। নিচে চন্দন পাউডার এর উপকারিতা তুলে ধরা হলো-
- যাদের ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত চন্দন ব্যবহার করতে পারেন উপকার পাবেন।
- ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে যাদের ত্বক সারা বছরই তেলতেলে থাকে তারা নিয়মিত চন্দন ব্যবহার করতে পারেন উপকৃত হবেন।
- ত্বকের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- মুখের দাগ এবং পোড়াভাব কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে।
- স্কিনের গ্লো বাড়াতে সাহায্য করে।
- ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- অ্যাকনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
নোট: চন্দনের প্যাক কিভাবে বানাবেন বা কোন সমস্যায় কিভাবে ব্যবহার করবেন তা উপরে চন্দন পাউডার ব্যবহারের নিয়মে তুলে ধরা হয়েছে। আপনি চাইলে সেখাব থেকে দেখে নিতে পারেন।