নাকফুল গাছের উপকারিতা

নাকফুল গাছের উপকারিতা

মূলত বনগাঁদা গাছ গ্রামের মানুষের কাছে নাক ফুল নামে পরিচিত। ফুলগুলো দেখতে অবিকল নাকফুলের মতো যে কারণে একে নাকফুল গাছ বলা হয়। নাকফুল গাছের কাণ্ডের প্রত্যেক শীর্ষে একটি করে ফুল ফুটে থাকে। গাছগুলো সাধারণত আগাছার মধ্যে জন্মিয়ে থাকে। নাকফুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল Acmella repens (এটি সূর্যমুখী পরিবারভুক্ত একটি ফুল গাছ)। এটি বহুবর্ষজীবী ফুল গাছ। নাক ফুল সাধারণত হলুদ রঙের হয়ে থাকে। নাকফুল গাছের পাতা সবুজ, মসৃণ, ডিম্বাকৃতির এবং অগ্রভাগ কিছুটা সুচালো হয়ে থাকে।

নাকফুল গাছকে ইলেকট্রিক ডেইজিও বলা হয়। কারণ ডাঁটা ছিড়ে মুখে দিলে বিদ্যুতের শকের মতো অনুভূত হয় এবং এর স্বাদ পিপারমিন্টের মতো মনে হয়।

নাকফুলের উপকারিতা

নাকফুল সাধারন একটি গাছ। তবে নাক ফুল গাছের উপকারিতা বা ঔষধী গুনাগুনের কথা জানলে আপনি অবাক হবেন। গ্রামের রাস্তা ঘাটে জঙ্গলে খুব সহজেই এই গাছ পাওয়া যায়। নিচে নাকফুল গাছের উপকারিতা সমূহ তুলে ধরা হলো-

  1. মাড়িব্যথা বা দাঁতের ব্যথায় নাকফুল গাছের ফুল খুবি উপকারী। এক্ষেত্রে ব্যথার স্থানে নাকফুল গাছের ফুল লাগিয়ে রাখলে ব্যথা দ্রুত কমে যায়।
  2. ঠান্ডা বা গলা ব্যথায় নাকফুল গাছের পাতা পানি দিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি হালকা গরম থাকা আবস্থায় মূখে নিয়ে গড়গড়া করলে বা খেলে গলাব্যথা চলে যায়।
  3. আমাশয়ের সমস্যায় নাকফুল গাছের পাতা ১০ গ্রামের মত নিয়ে পানি দিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি পান করলে আমাশয়ের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
  4. গনোরিয়া রোগ হলে প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা-পোড়া করে। সে ক্ষেত্রে নাকফুল গাছের পাতা ও কান্ডসহ রস করে প্রতিদিন ৩ - ৪ চা চামচ রস তিন সপ্তাহ খেলে জ্বালা-পোড়া কমে যাবে।
  5. পেট ফাঁপার সমস্যায় এক থেকে দুই চা চামচ নাকফুল গাছের পাতার রস চায়ের কাপের হাফ কাফ গরম পানির সাথে মিশিয়ে তার মধ্যে কিছুটা চিনি মিশিয়ে খেলে পেট ফাপার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  6. বিচ্ছু, মৌমাছি, মধুপোকা ইত্যাদি পোকার কামড়ে আক্রান্ত স্থানে নাকফুল গাছের পাতার রস লাগালে ব্যথা ও জ্বালা-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
  7. শরীর জ্বালা-পোড়ার সমস্যায় প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে চায়ের কাপের হাফ কাপ হালকা গরম পানির সাথে দু-চা চামচ নাকফুল গাছের পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বালা-পোড়ার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

নাকফুল গাছ শুধু ওষধ হিসেবে নয়। বরং খাদ্য, মসলা ও প্রসাধনি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। নাকফুল গাছের পাতা কাচা আবস্থায় সালাদ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও স্যুপ তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। এমনকি খাবারের ফ্লেভার হিসেবে নাকফুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নাকফুলের রস নিয়মিত হালকা করে হাত-পায়ের নখে ঘষলে নখের উজ্জ্বলতা বাড়ে।

নাকফুল গাছের ছবি

নাকফুল গাছ

নাক ফুল গাছ

নাকফুল গাছের ছবি

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url