জিরাশাইল ধানের চাষ পদ্ধতি ও বৈশিষ্ট্য

জিরাশাইল ধান

জিরাশাইল ধান আমাদের কাছে এখন প্রযান্ত খুব একটা পরিচিত নয়। তাই বেশির ভাগ মানুষই এই ধান সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা অনলাইনের মাধ্যমে বা কারো কাছ থেকে এই ধানের নাম শুনেছেন এবং এই ধান চাষ করতে চাচ্ছেন। কিন্তু কিভাবে চাষ করবেন তা যানেন না। আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জিরাশাইল ধান এর বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানাব।

জিরাশাইল ধান চাষ পদ্ধতি:

জিরাশাইল ধানের এই জাতটি চাইলে আপনি সকল মৌসুমেই রোপন করতে পারবেন। তবে এই ধানটি মূলত ইরি মৌসুমের ধান। নিচে জিরাশাইল ধান চাষ পদ্ধতি আলোচনা করা হল-

  1. প্রতি বিঘার জন্য ৫ কেজি ধানের বীজ, বীজ তলায় বপন করতে হবে।
  2. বীজ বোপন করার পর থেকে ১৮ – ২২ দিন বয়সী চারা তুলে জমিতে রোপন করতে হবে।
  3. ১৫ x ১৫ সেন্টিমিটার দুরত্ব চারা রোপন করতে হবে।
  4. সর্বশেষ জমি চাষের সময় তিন ভাগের দুই ভাগ ইউরিয়া সার, সবটুকু এমওপি সার, টিএসপি সার, জিপসাম সার ও জিংক সার প্রয়োগ করতে হবে। বাকি এক ভাগ ইউরিয়া সার চারা রোপনের ১৫ – ২০ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে (ইউরিয়া সারের প্রয়োজন না থাকলে না দিলেও হবে)।
    • বিঘা প্রতি ৩০-৪০ কেজি ইউরিয়া সার
    • বিঘা প্রতি ৮-১৬ কেজি এমওপি সার
    • বিঘা প্রতি ৭-১৪ কেজি টিএসপি সার
    • বিঘা প্রতি ৪-৮ কেজি জিপসাম সার
    • বিঘা প্রতি ০.৭-১.৪ কেজি জিংক সার
  5. যেহেতু এটি একটি আগাম ধানের জাত তাই জমি আগাছামুক্ত করার তেমন একটা প্রয়োজন পরে না। তবে চারা লাগানের ৩০ – ৪০ দিনের মধ্যে যদি অনেক বেশি আগাছা দেখা যায় তাহলে তা তুলে ফেলবেন।
  6. থোর অবস্থা থেকে দুধ আশা অবস্থা পর্যন্ত জমিতে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  7. চারা লাগানোর পর ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।

জিরাশাইল ধানের বৈশিষ্ট্য:

অনেকেই জিরাশাইল ধান কেমন বা এর বৈশিষ্ট কি সে সম্পর্কে জানতে চান। তাদের জন্য জিরাশাইল ধানের বৈশিষ্ট্য গুলো নিচে তুলে ধরা হল-

  1. গাছের ডিগ পাতা খাড়া ও লম্বা হয়।
  2. ধানের আকার আকৃতি মাঝারি চিকন ধরনের।
  3. এই জিরাশাইল ধানের জাতটি একটি আগাম জাত।
  4. খাটো জিরাশাইল ধানের আয়ুসকাল ৯৫ – ১০৫।
  5. জমিতে রোপন করার ৭৫ – ৮০ দিনে এই ধান কাটা যায়।

জিরাশাইল ধানের ফলন:

খাটো জিরাশাইল ধান একটি উচ্চ ফলনশীল ইরি মৌসুমের ধানের জাত। তবে কয়েকজন কৃষক আমন মৌসুমে কেমন ফলন হয় তা দেখার জন্য চাষ করেছেন এবং তারা আশার থেকেও অনেক ভাল ফলন পেয়েছেন। এই ধানের গড় ফলন বিঘা প্রতি ২৫ মন। তবে উপযুক্ত পরিবেশ ও সঠিক পরিচর্যা পেলে বিঘা প্রতি ৩০ – ৪০ মন ধান পাওয়া যায়।

জিরাশাইল চালের দাম:

জিরাশাইল চালের দাম ৮০ – ৯০ টাকা করে প্রতি কেজি।

জিয়াশাইল ধান থেকে যে চাল হয় সেটাকে অনেকেই মিনিকেট চাল বলে থাকেন। বাস্তবে এই নামে ধান বা চালের কোন অস্তিত্ব নেই। লোকমুখে শুনে শুনে মিনিকেট নামটা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত।

জিরাশাইল চালের বৈশিষ্ট্য:

নিচে জিরাশাইল চালের বৈশিষ্ট্য গুলো তুলে ধরা হল-

  1. জিরাশাইল চাল চিকন ও লম্বা হয়।
  2. জিরাশাইল চালে কোনো প্রকার গন্ধ থাকে না।
  3. জিরাশাইল চালের ভাত খেতে খুব সুস্বাদু হয়।
  4. জিরাশাইল চালের ভাত সহজে ঘেমে যায় না।
  5. জিরাশাইল চালের ভাত গুলো সাদা ও ঝরঝরে হয়।
  6. জিরাশাইল চালে কোন প্রকার ময়লা বা খুদ থাকে না।
  7. রান্নার পর দীর্ঘক্ষণ প্রযান্ত ভাত সংরক্ষণ করা যায়।
Advertisement

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top