মরিচ এক প্রকারের ফল যা মসলা হিসাবে রান্নায় ঝাল স্বাদের জন্য ব্যবহার করা হয়। মরিচের আদি নিবাস আমেরিকা মহাদেশে। তবে বর্তমানে পৃথিবীর সব জায়গায় এটি রান্না ও ঔষধি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। প্রায় ৭৫০০ বছর আগে থেকেই আমেরিকার আদিবাসীরা মরিচ ব্যবহার করে আসছে।
উচ্চ ফলনশীল মরিচ চাষ করে বর্তমানে অনেক কৃষক বেশ লাভবান হয়েছেন। আমাদের দেশে এখন অনেক প্রকারের উন্নত জাতের মরিচ পাওয়া যায়। নিচে উচ্চ ফলনশীল মরিচের জাত উল্লেখ করা হলো–
- বারি মরিচ -১
- বারি মরিচ-২
- বারি মরিচ -৩
- বিনা মরিচ- ১
- বিনা মরিচ- ২
- বিজলি প্লাস
- বিজলি প্লাস ২০২০
- ফায়ার বক্স
- অনল ১৭০১
- নাগরাজ
- মরিচ সুপার
- মরিচ কিং
- সনিক
- প্রিমিয়াম
- ধুম
- মেজর
- ডেমন
- চন্দ্রমুখী
- হট মাস্টার
- এম এস ফায়ার
- যমুনা ইত্যাদি জাত পাওয়া যায়।
মরিচ গাছের বৈশিষ্ট্য:
মরিচ গাছ একটি সপুস্পক উদ্ভিদ। আমাদের দেশে দুই ধরনের মরিচ গাছ দেখতে পাওয়া যায়। একটি ঝাল মরিচ আর অন্যটি কম ঝাল বা ঝালহিন মরিচ। নিচে মরিচ গাছের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো-
- মরিচ গাছ প্রচুর শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট ঝোপালো হয়।
- মরিচ গাছের অনেক গুলো কাণ্ড থাকে।
- গাছের কান্ড ছোট এবং বড় দুই রকমের হয়।
- মরিচ গাছের গড় জীবনকাল ১৮০-২১০ দিন।
- মরিচ গাছের কান্ড, শাখা প্রশাখা ও পাতার রং সবুজ হয়।
- মরিচ গাছের ফুলের রং সাদা হয়।
- ফলের কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকে এবং পাকার পর লাল রং ধারন করে।
- মরিচের ফুলের পাঁচটি সাদা পাপড়ি থাকে এবং দেখতে অনেকটা চোজ্ঞের মত।
- মরিচ গাছের স্ব-পরপরাগায়ন ঘটে।
- প্রতি গাছে মরিচের সংখ্যা ১৫০-২০০ টি।
- ফলের দৈর্ঘ্য ১০-১৫ সে.মি. এবং প্রস্থ ৩-৪.৫ সে.মি. প্রযান্ত হয়।
মরিচ কোন মাটিতে ভালো হয়:
মরিচ জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো-আঁশ মাটিতে ভালো হয়। তবে, পানি নিষ্কাশন সুবিধাযুক্ত বেলে দোঁ-আঁশ মাটিতেও মরিচ চাষ করা হয়। অম্লীয় মাটিতেও মরিচের চাষ করা যায়। কিন্তু ক্ষারীয় মাটিতে মরিচ ভালো হয় না।
মরিচ চাষের উপযুক্ত সময়:
খরিফ-১ মৌসুমে: ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ (১ই ফাল্গুন থেকে ৩০ই ফাল্গুন) মাস প্রযান্ত মরিচ চাষের উপযুক্ত সময়।
খরিফ-২ মৌসুমে: ১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর (শ্রাবণ থেকে ভাদ্র ) মাস প্রযান্ত মরিচ চাষের উপযুক্ত সময়।
রবি মৌসুমে: মরিচ চাষের উপযুক্ত সময় হলো সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস প্রযান্ত।
কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুন:
কাঁচা মরিচে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচে ১২৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। এছাড়াও মরিচে নানা রকম পুষ্টিগুন রয়েছে, যেমন- খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা রয়েছে ।