মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ

মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ
বর্তমানে অনেক কৃষক মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করে বেশ সফল হয়েছেন। এই পদ্ধতিতি সারা জমিতে সারি সারি বেড তৈরি করে তার উপর মালচিং পেপার বিছিয়ে সেখানে গাছ লাগানো হয়। এতে বর্ষার মৌসুমে গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকার ভয় থাকে না আবার গ্রীষ্মের মৌসুমে অধিক তাপে গাছের গোড়ার মাটি শুকিয়ে যাওয়ার ভয়ও থাকে না। ফলে মরিচের ফলন খুব ভালো হয়। যে জন্য চাষীরা মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু নতুন চাষীরা মালচিং পদ্ধতিতে কিভাবে চাষ করতে হয় তা জানেন না। আপনিও যদি মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করতে চান তাহলে আজকের এই পোষ্টটি আপনার জন্য। কারণ এই পোষ্টের মাধ্যমে আজকে আমরা মালচিং পেপার বিছিয়ে কিভাবে মরিচ চাষ করবেন তা নিয়ে আলোচনা করব।

মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ:

মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করা খুবই সহজ এবং বেশ লাভজনক। খরিফ মৌসুমের জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ এবং রবি মৌসুমের জন্য ১ – ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মরিচ চাষ করার উপযুক্ত সময়। নিচে মালচিং পদ্ধতিতে কিভাবে মরিচ চাষ করবেন তা তুলে ধরা হলো-
  1. মরিচ চাষ করার জন্য প্রথমে জমির চারিদিক দিয়ে আইলের অতিরিক্ত অংশ কেটে নিতে হবে।
  2. তারপর ট্রাক্টর দিয়ে ৪-৬টি গভীর চাষ দিতে হবে।
  3. জমি তৈরি করার শেষ চাষের সময় রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
  4. তারপর মই দিয়ে মাটি সমান করে আগাছা বেছে ফেলে দিতে হবে।
  5. তারপরে মাটির ঢেলা গুলো ভেঙে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।
  6. এরপর বেড তৈরি করে নিতে হবে।
  7. বেড চওড়ায় ১ মিটার হলে ভালো হয় এবং দৈর্ঘ্য জমির আকার অনুসারে হবে।
  8. বেডের উচ্চতা ১০-১৫ সে.মি. হতে হবে।
  9. পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝখানে ১০ সে.মি. গভীরতা ও ৪০ সে.মি. প্রশস্ত বিশিষ্ট নালা রাখতে হবে।
  10. জমি উত্তমরূপে তৈরি করা হয়ে গেলে তার উপর দিয়ে মালচিং পেপার বিছিয়ে দিতে হবে।
  11. মালচিং পেপার বিছানোর ৭ থেকে ১০ দিন পর মরিচের চারা রোপন করতে হবে।
  12. গাছ থেকে গাছের দূরত্ব হবে ২০-২৪ ইঞ্চি।
  13. সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৩৬ – ৫০ ইঞ্চি।

মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করার সুবিধা:

মালচিং পেপার ব্যবহার করে কাঁচা মরিচ চাষ করার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। নিচে সেই সব উপকারিতার কথা উল্লেখ করা হলো-
  1. এই পদ্ধতিতে একবারে বেশি খরচ হলেও তার পরে আর কোনো খরচ নেয়।
  2. জমি শেষ চাষের সময় একবারে সব সার দিয়ে গাছ লাগাতে হয়।
  3. চারা রোপন করার পরে জমিতে আর কোনো সার প্রয়োজন হয় না।
  4. মালচিং পেপারের কারণে বিভিন্ন পোকা মাকড়ের আক্রমণও কম হয়।
  5. এই পদ্ধতিতে গাছের গোড়া ছাড়া পুরো বেড মালচিং পেপার দিয়ে ঢাকা থাকে ফলে কোনো প্রকারের আগাছা জন্মাতে পারে না। ফলে আগাছা দমনের বাড়তি খরচ বেচে যায়।
Advertisement

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top