হাইব্রিড আমন ধানের জাত ও চাষ পদ্ধতি

হাইব্রিড আমন ধানের জাত

বর্তমান পৃথিবী অনেকটা এগিয়ে, এখন প্রায় সব ধরনের ফসলের উন্নত ও উচ্চফলনশীল জাত রয়েছে। ঠিক তেমনি আমাদের দেশে এখন অনেক প্রকার আমন ধানের হাইব্রিড জাত পাওয়া যায়। এই সব উন্নত ও উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করে চাষীরা বেশ খুসি, কারণ এখন তারা আশানুরুপ ফলন পাচ্ছে। আপনারা যারা ছোট চাষী আছেন বা নতুন চাষী আছেন, তারা অনেকে বুঝতে পারেন না কি ধান লাগাবেন বা কোনটা লাগালে ভালো হবে।

আমন ধানের জাত সমূহ (হাইব্রিড):

আমাদের দেশে চাষ করার জন্য অনুমোদিত এবং দেশের কৃষকদের পছন্দের কিছু হাইব্রিড আমন ধানের জাত নিচে তুলে ধরা হলো-

  1. বিইউ সুগন্ধি ধান - ১
  2. ব্র্যাক হাইব্রিড ধান মুক্তি - ১
  3. বিএডিসি হাইব্রিড ধান -২
  4. বিএডিসি হাইব্রিড ধান - ৩
  5. ব্রি হাইব্রিড ধান - ৪
  6. বায়ার হাইব্রিড ধান - ৪
  7. বিএডিসি হাইব্রিড ধান - ৪
  8. বায়ার হাইব্রিড ধান - ৫
  9. বিএডিসি হাইব্রিড ধান -৫
  10. ব্রি হাইব্রিড ধান - ৬
  11. বায়ার হাইব্রিড ধান - ৬
  12. বিএডিসি হাইব্রিড ধান -৬
  13. সিনজেনটা সুবর্ণা - ৮
  14. বায়ার হাইব্রিড ধান - ১০
  15. ব্র্যাক হাইব্রিড ধান - ১০
  16. পেট্রোকেম এগ্রো ধান - ১২
  17. পেট্রোকেম এগ্রো ধান - ১৬
  18. সুপ্রিম হাইব্রিড ধান - ১৬

উপরের উল্লেখিত জাতের ধান চাষ করে চাষিরা বেশ লাভবান হয়েছে। তা্‌ই আপনি এখান থেকে যে কেনে একটি ধান চাষ করতে পাড়েন হতাশ হবেন না।

হাইব্রিড আমন ধানের চাষ পদ্ধতি:

ধান চাষ তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়। তবে যে কোনো কাজ জানা না থাকলে তা কঠিন মনে হওয়া সাভাবিক ব্যাপার। তাই আজকে আমরা আমদেরকে হাইব্রিড আমন ধান কিভাবে চাষ করবেন বা তার পরিচর্যা কিভাবে করবেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব।

বীজতলার জন্য স্থান নির্বাচন:

বীজপাতার জন্য আপনাকে উঁচু এবং উর্বর জমি নির্বাচন করতে হবে। যাতে করে বৃষ্টির পানিতে বীজতলা ডুবে না যায়। তবে আপনার যদি উঁচু জমি না থাকে তাহলে আপনি ভাসমান বীজতলা তৈরি করতে পারেন। যেখানে বীজ পাতায় দিবেন সেখানকার মাটি যদি উর্বর না হয় বা উর্বর কম হয় তাহলে বীজতলায় গোবর সার প্রতি শতকে দুই মন ব্যবহার করে বীজতলা উর্বর করে নিতে পারেন।

চারার বয়স:

যে সব বীজ দীর্ঘ মেয়াদি, সে সব বীজ বীজতলায় বোপন করার পরে ২০ থেকে ২৫ দিন বয়সী হলে তখন চারা তুলে আগে থেকে প্রস্তুত করা জমিতে ‌রোপন করতে হবে এবং চারা রোপণের উপযুক্ত সময় ১৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট।

আবার যে সব বীজ স্বল্পমেয়াদি, সে সব বীজ বীজতলায় বোপন করার পরে ১৫ থেকে ২০ দিন বয়সী হলে তখন চারা তুলে আগে থেকে প্রস্তুত করা জমিতে ‌রোপন করতে হবে এবং চারা রোপণের উপযুক্ত সময় ২৫ জুলাই থেকে ২৫ আগস্ট।

চারা রোপণ:

চারা গুলো উওর - দক্ষিণ লাইন করে রোপণ করতে হবে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাস চলাচল করতে পারে এবং চারা রোপনের সময় এক সারি‌ থেকে অন্য সারির দূরত্ব হবে ২৫ সে:মি: (৮ ইঞ্চি) আর এক গুছি থেকে অন্য গুছির দূরত্ব হবে ১৫ সে:মি: (৬ইঞ্চি)। তবে জমি যদি বেশি উর্বর হয় তাহলে আর একটু ফাঁকা করে লাগাতে পারেন।

সেচ ব্যবস্থা:

আমন ধান চাষ করতে হলে সেচ দেবার দরকার পরে না। কারণ, আমন ধানের চাষ সম্পূর্ণ বৃষ্টির উপর নির্ভর করে। বর্ষার মৌসুমে প্রায় ৮০% বৃষ্টি হয় যা আমন ধান চাষ করার জন্য যথেষ্ট। বৃষ্টি নির্ভর আমন ধান চাষের জমিতে অনেক সময় অনাবৃষ্টির কারণে জমি শুকিয়ে যায়। ওই সময় হালকা পানির সেচ না দিতে পারলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই সীমিত পরিমাণে পানির সেচ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

সার প্রয়োগ:

আমন ধান চাষ করতে হলে জমি, মাটি ও আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে কিছু পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হবে। এজন্য প্রতি বিঘা জমিতে ইউরিয়া ২৬ কেজি, ডিএপি ৮ কেজি, টিএসপি ১৪ কেজি ও জিপসাম ৯ কেজি যথাক্রমে তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।

প্রথম কিস্তি চারা রোপণের ৭ থেকে ১০ দিন পরে প্রয়োগ করতে হবে, দ্বিতীয় কিস্তি চারা রোপণের ২৫ থেকে ৩০ দিন পরে প্রয়োগ করতে হবে এবং তৃতীয় কিস্তি কাইচ থোড় আসার ৫ থেকে ৭ দিন আগে প্রয়োগ করতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url