হাইব্রিড ঘাসের বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি

হাইব্রিড ঘাস চাষ

গবাদি পশুর বিকল্প খাদ্য হিসাবে হাইব্রিড জাতের ঘাস বর্তমানে আমাদের দেশে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছে। গবাদি পশুর চাহিদা অনুযায়ী কাচা ঘাস না থাকায় চাষীরা হাইব্রিড জাতের ঘাস চাষ করে তার খামারের চাহিদা পূরণ করে থাকেন। অনেক খামারি বা নতুন খামারিরা জানেন না কি ভাবে হাইব্রিড জাতের ঘাস চাষ করতে হয়। যে কারণে তাদের পরতে হয় বিপাকে কেননা বর্তমানে দানাদার খাবারের যে দাম তা দিয়ে খামার চালানো কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। যে কারণে আমরা আজকে হাইব্রিড ঘাসের বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব।

হাইব্রিড ঘাসের বৈশিষ্ট্য:

অনেকে খামারি (বিষেশ করে নতুন খামারি) নিজের খামারের গবাদি পশুর জন্য হাইব্রিড ঘাস চাষ করতে চান। কিন্তু হাইব্রিড ঘাসের বৈশিষ্ট্য জানেন না। আপনিও জনি হাইব্রিড ঘাসের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই পোষ্টি আপনার জন্য। নিচে হাইব্রিড ঘাসের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো-

  1. হাইব্রিড জাতের ঘাস উচ্চ ফলনশীল।
  2. হাইব্রিড জাতের ঘাস দ্বিগুণ ফলনশীল ও দ্রুত বর্ধনশীল।
  3. এই জাতের ঘাস ৩৫ – ৪০ দিনের মধ্যে অনেক বড় হয়ে যায় এবং গবাদি পশুকে খাওয়ানোর উপযুগী হয়ে যায়।
  4. বছরের সব সময় এই ঘাস চাষ করা যায়।
  5. হাইব্রিড ঘাস গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেরা সবাই অনেক পছন্দ করেন এবং তৃপ্তি সহকারে খায়।
  6. এই জাতের খাসের গোড়া অনেক মোটা, রসালো ও নরম হয়।
  7. এই ঘাস খেলে দুধ দেওয়া গবাদি পশুর দুধ বেড়ে যায়।
  8. হাইব্রিড জাতের ঘাস চাষ করে আবার কেটে অন্য ফসল চাষ করা যায়।
  9. ৬-১২ ফুট পর্যন্ত হাইব্রিড জাতের ঘাস লম্বা হয়ে থাকে।
  10. হাইব্রিড জাতের ঘাস চাষ করতে বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না।

হাইব্রিড ঘাস চাষ পদ্ধতি:

অনেক জাতের হাইব্রিড ঘাস এখন আমাদের দেশে পাওয়া যায়। যেমন: জাম্বু, বীজ ঘর ১, যারা ১, পাকচং ১, ইন্দোনেশিয়ান স্মার্ট নেপিয়ার রঙিন ঘাস ইত্যাদি। আপনি যে জাতের ঘাসই চাষ করুন না কেনো সব হাইব্রিড ঘাস চাষ করার পদ্ধতি প্রায় একি রকম। তাহলে চলুন হাইব্রিড ঘাস চাষ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

চাষের সময় কাল:

হাইব্রিড জাতের ঘাস বছরের সকল মৌসুমে চাষ করা যায়।

স্থান নির্বাচন:

এই জাতের ঘাস চাষ করতে হলে আপনাকে এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে যে স্থানে বর্ষার মৌসুমে পানি জমে থাকে এবং পানি নিষ্কাশনের তেমন ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ, যে স্থানে অধিক সময় ধরে পানি জমে থাকে ওই স্থানে এই জাতের ঘাস চাষ করার জন্য নির্বাচন করতে হবে।

জমি তৈরি:

যদি আপনি সমতল স্থানে এই জাতের ঘাস চাষ করতে চান তাহলে আপনে ট্রাক্টর বা নাঙ্গল দিয়ে ভালো করে জমি চাষ দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে নিতে হবে। আর যদি পুকুরে চাষ করতে চান তাহলে আগে আগাছা পরিষ্কার করে তার পরে কোদাল দিয়ে মাটি কুপিয়ে নিতে হবে।

বীজ বপন বা কাটিং রোপন:

বীজ বপন করতে হলে প্রথমে বীজ রেডি করতে হবে। বীজকে প্রথমে রোদে ১-২ ঘণ্টা শুকাতে হবে, তারপরে বীজকে ঠান্ডা করে ২৪-৪৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভিজানো শেষ হলে সরিষা বা গমের মতন করে জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে।

কাটিং রোপন করতে হলে প্রথমে দুই গিটের কাটিং সংগ্রহ করতে হবে, তার পর ১ হাত দুরে দূরে রোপন করতে হবে। এই ঘাস এক বার চাষ করলে ৫-৮ বছর ঘাস কাটতে পারবেন।

নোট: যদি পুকুরে বা আবদ্ধ জলাশয়ে ঘাস চাষ করতে চান তাহলে বীজ বপন করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে কাটিং রোপন করতে হবে। কাটিং পানির অনুপাত হিসাব করে সংগ্রহ করতে হবে, যাতে করে এক গিট পানির উপরে থাকে। না হলে কাটিং নষ্ট হয়ে যাবে।

পানির সেচ:

এই জাতের ঘাসের বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না তবে বীজ থেকে চারা ৩-৪ ইঞ্চি যখন হবে তখন পানির সেচ দিতে হবে তাহলে চারা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

Advertisement

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top