প্রাচ্যের ভেনিস বলা হয় কাকে?

প্রাচ্যের ভেনিস বলা হয় বরিশালকে

ভেনিস ইতালির একটি শহর। সাধারনত ভেনিস শব্দের অর্থ হল অদৃশ্য, বিলুপ্ত, অপসৃত বা মিলিয়ে যাওয়া। কিন্তু ইতালির ভেনিস শহরটি ঠিক তার উলটো কারণ তার সুন্দর্য সারা বিশ্বের মানুষকে মুখরিত করেছে। ফলে ভেনিস শহরে সারা বছরই পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০,০০০ পর্যটক এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। সেই শহরের সাথে মিল রেখে যে শহরকে প্রাচ্যের ভেনিস বলা হয় বা বাংলার ভেনিস বলা হয় তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

প্রাচ্যের ভেনিস কাকে বলা হয়?

প্রাচ্যের ভেনিস বরিশালকে বলা হয়।

বরিশালের খাল-বিল, নদী-নালা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইতালির ভেনিস শহরের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি "প্রাচ্যের ভেনিস/ বাংলার ভেনিস" নামে বরিশালকে আখ্যায়িত করেন। যে কারণে বরিশালকে বাংলার ভেনিস বলা হয়।

বরিশালকে কেন বাংলার ভেনিস বলা হয়?

মূলত কবি কাজী নজরুল ইসলাম দেশের প্রতি ভালোবাসা ও জাতীয়তাবাদী চেতনা থেকেই বরিশালকে বাংলার ভেনিস উপাধি দিয়েছেন। নদী ও খালকে অক্ষুন্ন রেখেই ইতালীর ভেনিস শহর তার উন্নয়ন সাধন করেছে। ইতালীর ভেনিস শহরকে রোমান্টিক ও আকর্ষনীয় করেছে সেখানকার নদী ও খাল। এদিকে বরিশাল শহরেও প্রচুর নদী ও খাল রয়েছে যে কারণে বরিশালকে নদীর শহরও বলা হয়। প্রচুর নদী ও খাল থাকার কারণে কবি বরিশাল শহরে সফরে এসে এই অঞ্চলের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে একে ইতালির ভেনিসের সাথে তুলনা করে বাংলার ভেনিস উপাধি দিয়েছেন।

এক সময় বলা হতো ধান, নদী, খাল এই তিনে বরিশাল, এগুলো সবই এখন অতীত।

ভেনিস কেন এতো বিখ্যাত?

ইতিহাসের ঐতিহাসিক ও প্রাচীন নগরের নাম হল ভেনিস। ভেনিস শহর এতো বিখ্যাত হওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। এখানে অন্যান্য বড় বা আধুনিক শহরের মতো পরিবেশ দূষণের দেখা মেলে না। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত হওয়ায় কারণে ভেনিস নগরী সকলের কাছেই আকর্ষণীয়। ইতালির নান্দনিক সৌন্দর্যের নগরী এটি যা ইউরোপের সবচেয়ে রোমান্টিক শহর। পানির উপরে ভেসে থাকা দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদ, যার গা ঘেঁষে এঁকে-বেঁকে বয়ে চলেছে লেক। এজন্য পৃথিবীজুড়ে ভেনিস শহর বিখ্যাত। এই শহরটি "ভাসমান শহর" নামেও অনেক পরিচিত।

পুরো শহরের বুক জুড়ে লেকের স্বচ্ছ জলে আকাশের মেঘগুলো ও প্রাসাদের প্রতিচ্ছবি গুলো জলের বুকে লুটোপুটি খায়। এই কারণে সারা পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে খুবি আকর্ষণীয়। অপূর্ব সুন্দর্যের এই শহরটিতে বলতে গেলে সারা বছরই পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে। এখানে প্রতিদিন প্রায় ৫০,০০০ পর্যটক এর সৌন্দর্য দেখতে আসেন।

পৃথিবীর ইতিহাসে ইতালীয় সভ্যতা ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। শিল্প সাহিত্য, বিশেষ করে স্থাপত্যশিল্পে ভেনিস নগরীর তুলনা হয় না। নগরের প্রতিটি স্থাপনায় এর ছাপ ফুটে আছে এখনো। নান্দনিক রূপ, রঙ-বেরঙের কারুকার্য নিয়ে স্বচ্ছ জলের সরোবরে দাঁড়িয়ে আছে এসব স্থাপনা। এই সব শিল্প সাহিত্য দেখলে যে কারো মন ভালো হয়ে যাবে।

সব থেকে মজার বিষয় হলো ভেনিস শহরে গাড়ি চালানোর কোনো রাস্তা নেই, পুরো শহর জুড়ে রয়েছে শুধু নদী আর খাল। এখানকার মানুষরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য ছোট ডিঙি নৌকা ব্যবহার করেন। ভেনিসে বসবাস করা প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা হল এই নৌকা।

১১৮টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে ভেনিস নগরী গঠিত।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url