তালের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

তালের গুড়ের উপকারিতা

আমাদের শরীরের জন্য তালের গুড় অনেক উপকারী তাই আমাদের নিয়মিত তালের গুড় খাওয়া উচিৎ। তবে তার জন্য চাই ভেজালমুক্ত ভালো মানের তালের গুড়। আমরা আজ এই পোষ্টে তালের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে নিচে আলোচনা করব।

তালের গুড়ের উপকারিতা

তাল বা তালের গুড় খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে, যা বলে শেষ করা যাবে না। নিচে তালের গুড় খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা তুলে ধরা হলো-
  • তালের গুড় ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ একটি খাবার, তাই নিয়মিত তালের গুড় খেলে লোহিত রক্ত কণিকার স্বাভাবিক মাত্রা ঠিক রাখতে এবং রক্তস্বল্পতা ধুর করতে সাহায্য করে।
  • প্রতি ১০ গ্রাম তালের গুড়ে ১৬ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যে কারণে যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত তালের গুড় খেলে উপকার পাবেন।
  • তালের গুড় পেশী এবং লিভারের কোষকে শক্তিশালী করে তোলে এবং অন্ত্রকে ভাল রাখতে সাহায্য করে।
  • তালের গুড় খেলে শরীরের তাপ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
  • যারা ফ্লু রোগে ভুগছেন তারা নিয়মিত তালের গুড় খান, ফ্লু'র উপসর্গ কমে যাবে।
  • নিয়মিত পরিমিত মাত্রায় তালের গুড় খেতে পারলে রক্ত পরিষ্কার হয়, ফলে শরীর সুস্থ থাকে।
  • তালের গুড় পাকস্থলিকে শীতল করতে সাহায্য করে, যে কারণে বিশেষজ্ঞরা গরমকালে তালের গুড়ের শরবত পান করতে পরামর্শ দেন।
  • গর্ভবতী নারীদের জন্য তালের গুড় বিশেষভাবে উপকারী কারন তালের গুড় তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে।
  • তালের গুড় মেন্সট্রুয়াল বা ঋতুস্রাব জনিত সমস্যায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যদি পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ করে মুড সুইং হয়, তাহলে ছোট এক টুকরা তালের গুড় খেয়ে নিন উপকার পাবেন।
  • যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত তালের গুড় খান কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে।
  • ঠান্ডা ও কফের তীব্রতা থেকে মুক্তি পেতে কুসুম গরম পানিতে তালের গুড় মিশিয়ে পান করুন কিংবা চায়ে চিনির পরিবর্তে তালের গুড় ব্যবহার করে পান করুন উপকার পাবেন।
  • তালের গুড়ে খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যে কারণে নিয়মিত তালের গুড় খেলে শরীরের "ফ্রি র‍্যাডিকেল ড্যামেজ" হওয়া থেকে প্রতিরোধ করবে এবং ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করবে।
  • তালের গুড় হল একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের শরীরকে প্রাকৃতিক ভাবেই পরিষ্কার করে এবং লিভারকে বিষমুক্ত করতে সাহায্য করে।

তালের গুড়ের অপকারিতা

তালের গুড়ের গুণগত মান সহ অন্যান্য সকল বিষয়ের উপর নির্ভর করে, তালের গুড় আসলে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। তবে প্রয়োজনের চেয়ে কোনো কিছুই বেশি খাওয়া ভাল নয়, তাই আপনাকে তালের গুড়ের ক্ষতিকর দিকগুলিও জানতে হবে। নিচে তালের গুড়ের অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হল।
  • সদ্য তৈরি তালের গুড় খেলে ডায়রিয়া হতে পারে, আবার কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে।
  • তালের গুড় চিনির তুলনায় স্বাস্থ্যকর হলেও যেহেতু এটি মিষ্টি তাই অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা এড়িয়ে চলুন।
  • গুড় তৈরির পদ্ধতি ভুল হলে কিংবা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হলে সেই গুড় থেকে অন্ত্রে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে।
  • প্রতি ১০০ গ্রাম গুড়ে ৩৮৫ মিলিগ্রাম ক্যালরি থাকে যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য অতিরিক্ত তালের গুড় খাওয়া ওজন কমানোর পরিবর্তে আরো বাড়িয়ে দিতে পাড়ে।
  • আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্র মতে, মাছ আর তালের গুড় কোনো অবস্থাতেই একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়।
  • যাদের পরিপাকতন্ত্রে আলসারের (আলসারেটিভ কোলাইটিস) সমস্যা আছে তাদের জন্য তালের গুড় খাওয়া একদমই উচিত নয়।
নোট: মনে রাখবেন, গুড়ের ভেতরে রাসায়নিক পদার্থ খুব সহজে মিশে যেতে পারে, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতএব, শুধুমাত্র ভাল মানের গুড় কিনুন এবং সঠিক পরিমাণে গ্রহন করুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url