গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি ফল। কলা পছন্দ করে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না। কলা বিভিন্ন গুণাগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে রয়েছে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপদান, ভিটামিন, আমিষ এবং খনিজ। এছাড়াও কলায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, শর্করা ও ক্যালরি। একটি বড় সাইজের কলাতে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যায় এবং একটি কলায় প্রায় ৫০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করতে দেহে পটাশিয়ামের উপস্থিতি খুবি জরুরি। পটাশিয়াম সঠিক উপস্থিতি স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

অনেকেই গর্ভাবস্থায় কলা খায় না, কারণ তারা মনে করে কলা খেলে গর্ভের বাচ্চার ঠান্ডা লাগবে। আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কিনা? আপনাদেরকে বলব যদি গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস বা অ্যালার্জির কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে সে অবশ্যয় কলা খেতে পারবে। এমনকি গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খাওয়া খুবি গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থায় কলা খেলে যে উপকার পাবেন

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কলা। যে কারণে বিশেষজ্ঞরা গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। উচ্চ কার্বোহাইড্রেইট সমৃদ্ধ এই ফলটি গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় সকল চাহিদা পূরণ করে। তাই প্রত্যেক গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকার একটি অংশ কলা হওয়া উচিত। নিচে গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয় বা গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা কি তা আলোচনা করা হলো-

  1. গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়তা করে।
  2. গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে মা ও গর্ভের সন্তানের হাড়ের বিকাশে সাহায্য করে।
  3. গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে গর্ভের বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
  4. গর্ভাবস্থায় গ্যাস্ট্রিক বা অম্বলের প্রবলেম হয়, তাই এই সময়ে কলা খেলে অম্বল থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
  5. গর্ভকালীন সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার আর এর থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কলা খাওয়া উচিত।
  6. অনেক গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় ক্ষুধা কমে যায়, তারা নিয়মিত কলা খেলে উপকার পাবেন। কারণ কলা ক্ষুধা বাড়াতে ও হজম করতে সাহায্য করে।
  7. গর্ভাবস্থায় অনেকে এডেমা বা ফোলাভাবের সমস্যায় পড়েন, তারা নোনতা খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন এবং ডায়েটে কলা যোগ করুন, কারণ কলা এডেমা কমাতে সাহায্য করে।
  8. গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতা বা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি থাকে, আর রক্তাল্পতার অন্যতম প্রধান কারণ হল আয়রনের অভাব। তবে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে আয়রনের ঘাটতি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
  9. কলায় রয়েছে পাইরিডক্সিন বা ভিটামিন বি৬ যা গর্ভাবস্থায় বমি বা বমিভাব ও সকালের অসুস্থতা থেকে মুক্তি দেয়। যে কারণে, গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস কলা খাওয়ায় সুপারিশ করেন বিশেষজ্ঞরা ।
  10. কলাতে উচ্চমাত্রায় শর্করা থাকে যা তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায়ের শেষের তিন মাস শরীলে প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয় তাই গর্ভাবস্থায় ডায়েটে কলা রাখা উচিত।
  11. গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন হয় যে কারণে রক্তচাপ উঠানামা করতে পারে। সুতরাং, গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে রক্তচাপ ঠিক থাকবে। কারণ "কলায় থাকা পটাসিয়াম" রক্তচাপ বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

নোট: ডায়াবেটিস বা অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে কলা খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আবার অনেকে বিশেষ করে গ্রামের মহিলারা গর্ভাবস্থায় কলা খেতে ভয় পান, কারণ তারা মনে করে এই সময় কলা খেলে গর্ভের বাচ্চার ঠান্ডা বা নিউমোনিয়া হতে পারে। কথাটা সম্পূর্ণ সঠিক নয় তবে, অতিরিক্ত কলা খেলে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত রুটিন চেক আপ করবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url