ব্রেস্ট টাইট করার উপায় (ঘরোয়া উপায়, ঔষধ, ক্রিম ও ব্যায়াম)
নারীদের জন্য সবথেকে বিব্রতকর একটি সমস্যা হলো ব্রেস্টের আকার নষ্ট হয়ে যাওয়া বা ব্রেস্ট ঝুলে যাওয়া।বিভিন্ন কারণে এই সমস্যাটির সম্মুখীন হতে পারেন। সে যে কারণেই ব্রেস্ট ঝুলে যায় না কেন কিছু নিয়ম যদি সঠিক ভাবে মেনে চলতে পারেন তবে ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট সঠিক শেইপ ফিরে পেতে পারে। আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানাবো কিভাবে খুব সহজেই ব্রেস্টের সঠিক শেইপ ফিরে পেতে পারেন।
ব্রেস্ট ঝুলে যাওয়ার কারণ
বয়স, ওজন, যত্নের অভাব ইত্যাদি কারণে ব্রেস্ট ঝুলে যায়। নিচে বিস্তারিত ভাবে ব্রেস্ট ঝুলে যাওয়ার কারণ তুলে ধরা হলো-
- শরীর চিকন থেকে মোটা বা মোটা থেকে চিকন হওয়ার ফলে ব্রেস্ট ঝুলে যেতে পারে।
- অনেক সময় অতিরিক্ত ব্যয়ামের কারণেও ব্রেস্ট ঝুলে যেতে পারে।
- প্রসূতিকালীন ব্রেস্টের আকার বড় হয়ে যাওয়ার কারণে ব্রেস্ট ঝুলে যায়।
- ব্রেস্ট অতিরিক্ত বড় ও ভারী হওয়ার কারণেও ব্রেস্ট ঝুলে যেতে পারে।
- ব্রেস্ট ঝুলে যাওয়া অন্যতম কারণ হলো অপ্রতুল ব্রেস্ট-সার্পোট বা ব্রা ব্যবহার।
নোট: অনেকেই জানতে চান সন্তানকে ব্রেস্ট ফিডিং করানোর সাথে ব্রেস্ট ঝুলে যাবার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা? না নেই। গবেষণায় দেখা গেছে ব্রেস্ট ফিডিং এর সাথে ব্রেস্টের আকার বা গঠনের পরিবর্তনের কোন প্রকার নেগেটিভ সম্পর্ক নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রসুতিকালীন ব্রেস্ট ঝুলার কারন হলো হঠাৎ করে ব্রেস্টের আকার পরিবর্তন এবং পরবর্তীতে তা আবার আল্প সময়েয় ব্যবধানে ছোট হয়ে যাওয়া।
ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার উপায়
ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার জন্য কয়েকটি উপায় আবলম্ভন করতে পারেন। নিচে ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার উপায় সমূহ বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো-
ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার ঘরোয়া উপায়
ঝুলে যাওয়া ব্রেস্টের সঠিক শেইপ ফিরে পাওয়ার জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় ব্যবহার করতে পাড়েন। নিচে ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার ঘরোয়া উপায় গুলো তুলো ধরা হলো-- তিন টেবিল চামচ শসার রস ও একটি ডিমের কুসুম এক সাথে মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। তারপর এই প্যাকটি গোসলের আধা ঘন্টা আগে ব্রেস্টের চারপাশে ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০ মিনিট আপেক্ষা করুন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এক সপ্তাহ এই প্যাকটি ব্যবহার করলে নিজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
- প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সাঁতার কাটুন। এতে করে আপনার ব্রেস্টের পেশি শক্ত হবে এবং সঠিক শেইপ ফিরে পেতে সাহায্য করবে।
- কয়েক টুকরা বরফ নিয়ে ব্রেস্টের চারপাশে বৃত্তাকার গতিতে ১ থেকে ২ মিনিটের জন্য ম্যাসাজ করুন। এই পদ্ধতিটি আপনার ব্রেস্টের পেশী শক্ত করতে সহায়তা করবে। প্রতিদিন নিয়ম করে এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে আপনার ঝুলে যাওয়া ব্রেস্টের সঠিক শেইপ ফিরে পাবেন।
- অ্যালোভেরা জেল আথবা অলিভ ওয়েল দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ মিনিট আপনার ব্রেস্টের আশেপাশে ম্যাসাজ করুন। নিয়মিত এভাবে ম্যাসাজ করার ফলে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে ফলে আপনার ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট আগের আবস্থান ফিরে পাবে।
- শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে চামড়া কুঁচকিয়ে যায় এবং ঝুলে যায়। শরীরে পানির অভাব হলে সবথেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় ত্বক এবং ব্রেস্ট। তাই ব্রেস্টের সঠিক শেইপ ফিরে পেতে হলে প্রতিদিন প্রচুর পরিমান পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে।
- ব্রেস্ট টাইট ও ফিট রাখার জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমান প্রোটিন গ্রহন করতে হবে। আপনি যদি আপনার বেস্ট সঠিক শেইপে ফিরে পেতে চান তাহলে আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় দুধ, ডিম, ডাল অবশ্যই রাখতে হবে। এছাড়াও ক্যালসিয়াম ও খনিজ ভিটামিনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করতে হবে।
- সব থেকে গুরুত্বপূর্ন হলো ব্রা। দীর্ঘক্ষণ ব্রা পড়ে থাকা যাবে না তাহলে বেস্টের শেইপ নষ্ট হয়ে যাবে। আবার একেবাড়েই ব্রা পড়া বন্ধ করে দিবেন না। দীর্ঘক্ষণ ব্রা পড়ে থাকা যেমন ক্ষতিকর আবার একেবারে না পড়াও ক্ষতির কারণ। তবে ব্রা সিলেকশনে আপনাকে আবশ্যয় সচেতন হতে হবে।
ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার ঔষধ
অনেকেই ঔষধ খেয়ে ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করতে চান। যা আপনার স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই আমি সাযেষ্ট করব ঘরোয়া উপায় ও এক্সারসাইজ মাধ্যমে ব্রেস্টের শেইপ ঠিক করুন। নিচে ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার ঔষধের নাম তুলে ধরা হলো-
- chimaphila 30 homeopathic medicine
নোট: বাজারে ব্রেস্ট টাইট করার অনেক প্রকার ঔষধ পাওয়া যায়। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ, এলোপ্যাথিক ঔষধ এবং ইনজেকশন ও পাওয়া যায়। এছাড়া কসমেটিক সার্জারি ও করা হয়।
ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার ক্রিম
অনেকেই ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার জন্য ক্রিম ব্যবহার করতে চান। নিচে তাদের সুবিদার্থে তিনটি ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার ক্রিমে নাম উল্লেখ করা হলো-
- Bobcare Ointment
- One spring Breast cream
- Oliva Strong Cream
নোট: এ ধরণের ক্রিমে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। এর থেকে ব্রেস্ট ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে এসব ক্রিম ব্যাবহার করার আগে আবশ্যয় ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করবেন।
ঝুলে যাওয়া ব্রেস্ট টাইট করার ব্যায়াম
কিছু ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ মাধ্যমে আপনি আপনার ঝুলে পড়া ব্রেস্ট টাইট করে নিতে পারেন। তার জন্য আপনাকে ধয্য সহকারে একটানা নিয়ম করে ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ করতে হবে। সঠিক উপায়ে প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে পারলে আপনার ঝুলে পড়া ব্রেস্ট সঠিক শেইপ ফিরে পাবে।
সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ হলো পুশ-আপ। এছাড়াও ডাম্বল ফ্লাইস, চেস্ট প্রেস, এলবো স্কুইজ, টি-প্লাঙ্কস ইত্যাদির সাহায্যেও ঝুলে পড়া ব্রেস্ট সঠিক শেইপ ফিরে পাবে। প্রতিদিন নিয়ম করে ১০ থেকে ১২ বার এই ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ গুলো করলেই হবে।
নরম ব্রেস্ট শক্ত করার উপায়
ব্রেস্ট অতিরিক্ত নরম হওয়ার ফলে তা নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। যে বিষয়টি খুবি বিবর্তকর একজন নারীর জন্য। কিন্তু আপনি যদি আপনার জীবন ধারার কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসেন তাহলে এই সমস্যা থেকে খুব সহরেই মুক্তি পেতে পারেন। নিচে নরম ব্রেস্ট শক্ত করার উপায় তুলে ধরা হলো-
- ব্রেস্টের পেশীগুলিকে শক্ত ও শক্তিশালী করার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- স্বাস্থকর খাবার গ্রহন করুন। অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
- পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করুন। পানি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- ব্রেস্টের শেইপ ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমান। ঘুম ঠিক না হলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- সাপোর্ট ব্রা ব্যবহার করুন।
নোট: ব্রেস্ট শক্ত করার জন্য নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা নেই। ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মেনে চললে ধীরে ধীরে ব্রেস্ট শক্ত হতে শুরু করবে।
দুধ ম্যাসাজ করার পদ্ধতি বা নিয়ম
প্রথমত বুঝতে হবে আপনি কিসের জন্য ব্রেস্ট ম্যাসাজ করবেন। কারণ দুধ ম্যাসাজ করার পদ্ধতি অনেক আছে যমন ধরুন দুধ বড় করার ম্যাসাজ বা ছোট করার ম্যাসাজ। তবে আমরা আজ এই পোস্টে দুধ বড় করার ম্যাসাজ নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তাহলে যেনে নেওয়া যাক দুধ ম্যাসাজ করার নিয়ম।
দুধ বড় করার ম্যাসাজ
অনেকের বুকের দুধ এতোটায় ছোট হয় যে তা নিয়ে বিবর্তকর আবস্থায় পড়তে হয়। তখন তারা দুধ বড় করার ঘরোয়া উপায় খুজেন। আপনিও যদি দুধ বড় করার উপায় জানতে চান তাহলে নিচের উল্লেখিত ম্যাসাজ গুলো অনুসরন করতে পারেন।
- প্রথমে হাত ঘষে গরম করে নিন তারপর দুই হাত দুধের নিচে হালকা চেপে ধরে বাম হাতে ঘড়ির কাটার উল্টা দিকে আর ডানহাত ঘড়ির কাটার দিকের মত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন। এভাবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আর সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় ১০ থেকে ১৫ মিনিট ১০০ থেকে ৩০০ বার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন। মাস খানেকের মধ্যে দুধের সাইজ বাড়তে শুরু করবে।
- বাথরুমে স্নান করার সময় হালকা গরম সরিষার তেল বা খাঁটি মধু হাতে নিয়ে দুধের চারপাশ ১০ থেকে ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করবেন।
নোট: আপনার শরীর যদি রোগা হয় তাহলে ২ থেকে ৩ মাস সুষম খাবার গ্রহন করে আগে শরীরটা ঠিক করে নিন। দুধ, ডিম, ফলমূল একটু বেশি করে খেলে উপকার পাবেন। সব সময় চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার শরীর বাড়ার সাথে সাথে আপনার দুধও বড় হবে।