কিভাবে বুঝবেন কিডনি ভালো আছে কিনা?

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়

কিডনি মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা রেচন তন্ত্রের প্রধান অংশ। এর প্রধান কাজ হলো রক্ত ছেঁকে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ পৃথকীকরণ এবং মূত্র উৎপাদন। এই কাজটি ঠিক মতো না হলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই সকলের কিডনি ব্যাপারে সচেতন থাকা উচিত। আর সচেতন থাকার জন্য আপনার কিডনি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে হবে।

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়

কিডনিতে রোগ হলো তা সহযে বোঝা যায় না। কারণ কিডনি গুরুতর ভাবে আক্রান্ত না হলে লক্ষন দেখা দেয় না। তাই কিডনি রোগ হয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য মাঝে মাঝে কিডনি পরীক্ষ করানো উচিত। বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, পরিবারে কারো কিডনি সমস্যা থাকলে বা বয়স ৬০ বছর হয়ে গেছে তাদের অন্ততপক্ষে বছরে ২ বার কিডনি পরীক্ষা করা উচিত। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য থেকে জানা গেছে মাত্র দুটি পরীক্ষার মধ্যেমে জানতে পারবেন আপনার কিডনি ভালো আছে কিনা। আর পরীক্ষা দুটি হলো-
  1. এসিআর (ACR)
  2. জিএফআর (GFR)

মূত্র পরীক্ষা বা ACR

ACR বা মূত্র পরীক্ষা হলো ক্রিয়েটিনিন ও অ্যালবুমিনের অনুপাত (অ্যালবুমিন হলো মানুষের শরীরের বিশেষ ধরনের প্রোটিন)। মূত্রথালিতে অ্যালবুমিন আছে কিনা সেটা বোঝার জন্য ACR বা মূত্র পরীক্ষা করা হয়। প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অনেক জরুরি। তাই স্বাভাবিক ভাবে রক্তে প্রোটিন থাকতে পারে, তবে তা মূত্রে থাকা সম্ভব নয়। তাই মূত্র পরীক্ষা করলে যদি মূত্রে প্রোটিন পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে কিডনি সঠিক মতো রক্ত ছেঁকতে পারছে না। এর জন্য ইউরিন টেস্টের রেজাল্টে প্রোটিন পজিটিভ এলে, নিশ্চিত হওয়ার জন্য NFR পরীক্ষা করে নিতে হবে। যদি পরপর ৩ মাসের ফলাফল পজিটিভ আসে তাহলে ধরে নিতে হবে কিডনিতে কোনো না কোনো সমস্যা রয়েছে।

GFR কাউন্ট

কিডনিতে কোন রোগ হলে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ অর্থাৎ ক্রিয়েটিনিন ঠিক মতো বের করে দিতে পারে না। তাই ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা হলো ১ম ধাপ। এরপরে GFR বা গ্লোমেরুলার ফিলট্রেশন রেট করাতে হবে। আর ডাক্তার সেই রিপোর্ট দেখে বলে দিবেন কিডনিতে কোন সমস্যা হয়েছে কিনা।

কিডনি নিয়ে কোনো রকমের ভয় থাকলে তাড়িতাড়ি করে এই পরীক্ষা গুলো করিয়ে নিবেন। কারণ কিডনির রোগ অল্পতে ধরা পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা সম্ভম। আর যদি কিডনি বিকল হয়ে যায় তাহলে ডায়ালাইসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা করাতে হবে।

কিডনি পরিষ্কার করার ঘরোয়া উপায়

কিডনি বা বৃক্ক আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই আমাদের উচিত কিডনিকে সুস্থ ও পরিষ্কার রাখা। অনেকেই হয়তো কিডনি পরিষ্কারের কথা শুনে অবাক হচ্ছেন। অবাক হওয়ার কিছু নেই, যারা জানেন না কিভাবে কিডনি পরিষ্কার রাখতে হয়। তারা এখান থেকে ঘরোয়া পদ্ধতি কিডনি পরিষ্কার করার উপায় জেনে নিন।

প্রথমে ১ আটি ধনেপাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিন। এরপর একটি পত্রে ধনেপাতার সাথে সামান্য কিছু পানি মিশিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ফুটানো পানি ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেঁকে বোতলে ভরে নিন। এই বোতটি সংরক্ষণ করার জন্য ফ্রিজে রাখতে পারেন। এই জসুটি প্রতিদিন ১ গ্লাস করে খেলে হাতে নাতে ফল পাবেন। কারণ ধনেপাতা কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে বেশ কর্যকারী। এছাড়াও এক আটি ধনেপাতায় রয়েছে প্রোটিন ৪%, ক্যালসিয়াম ৭%, পটাশিয়াম ১৫%, ক্যালরি ১%, ফাইবার ১১%, ম্যাঙ্গানিজ ২১%, আয়রন ১০%, কার্বোহাইড্রেট ১%, কপার ১১%, ফ্যাট ১%, ভিটামিন- কে ৩৮৮%, ভিটামিন- সি ৪৫%, ভিটামিন- এ ১৩৫% এবং ফলেট ১৬%।

কিডনি পরিষ্কার করবে যে ৯টি খাবার

কিডনি পরিষ্কার করার জন্য যে ৯টি খাবার খাওয়া উচিত তা হলো-

১. সবুজ শাকসবজি

প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। বিশেষ করে ভিটামিন- সি, ভিটামিন- কে, ফলিক এসিড এবং ফাইবারযুক্ত শাকসবজি। কারণ এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং কিডনির জটিলতা কমায়।

২. ড্যান্ডেলিয়ন

ড্যান্ডেলিয়ন হলো বন্য হলুদ ফুলের গাছ। এই ড্যান্ডেলিয়নের পাতা এবং মূল শুকিয়ে চায়ের মতো খেতে হয়। এটি প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায় এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। প্রাকৃতিকভাবে কিডনি পরিষ্কার করতে বেশ কার্যকরী।

৩. তুলসি পাতা

রক্তের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বজায় রাখতে এবং কিডনি পরিষ্কার করতে তুলসি পাতা বেশ ভালো কাজ করে। তাই প্রতিদিন চায়ের সাথে তুলসী পাতা ফুটিয়ে খেতে পারেন। তুলসী পাতায় থাকা অ্যাসিটিক এসিডের কারণে কিডনিতে হওয়া পাথর আস্তে আস্তে নরম হতে থাকে। এছাড়া তুলসি পাতায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কিডনি স্বাস্থ্যর জন্য বেশ ভালো।

৪. লাল আঙ্গুর

লাল আঙ্গুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন- এ, ভিটামিন- বি৬, ভিটামিন- সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফোলেট এবং পটাসিয়াম রয়েছে। যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও ক্লান্তি দূর করে এবং কিডনি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

৫. রাজমা

রাজমায় রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন- বি এবং খনিজ পদার্থ। যা কিডনি পরিষ্কার করার পাশাপাশি মূত্রনালীর কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে। তাই প্রতিদিন রাজমা না খেতে পারলেও অন্ততপক্ষে সপ্তাহে ২ বার খাওয়া উচিত।

৬. লেবুর রস

লেবুর রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড। যা রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে। তাই আপনারা কিডনি পরিষ্কার করার জন্য প্রতিদিন ১ গ্লাস পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন।

৭. তরমুজ ও বেদানা

প্রতিদিন তরমুজ ও বেদানা খেতে পারলে কিডনির জন্য ভালো। কারণ তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জল, পটাশিয়াম ও লাইকোপেন, যা কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে এবং প্রস্রাবের অম্লতা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বেদানায় রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ও পটাশিয়াম, যা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হতে বাধা দেয়।

৮. বিট রস

বিটের রস কিডনির জন্য অনেক উপকারি। বিটের রসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও বিটের রস প্রস্রাবে অ্যাসিডিটি উৎপাদন করে যা কিডনিতে পাথর হওয়ার জন্য দায়ী ক্যালসিয়ামকে অপসারণ করে। বিটের রস রক্ত পরিষ্কার করে যা কিডনি পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে।

৯. গুজবেরি

গুজাবেবি বা আমলকীতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাশাপাশি উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন- সি, ভিটামিন- ই এবং ভিটামিন- কে। এছাড়া রয়েছে দস্তা, ক্যালসিয়াম ও আয়রন যা কিডনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

কিডনি সুস্থ রাখার খাবার

কিডনি সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন যে খাবার গুলো আমাদের খাওয়া উচিত তা হলো-

বাঁধাকপি

বাঁধাকপি শীতকালীন সবজি। অনেকে এই সবজিটিকে পাতাকপি নামে চিনে থাকবেন। এই সবজিটি দামেও সস্তা এবং পুষ্টিগুণেও ভরপুর। তারসাথে স্বাদের কোনো তুলনা হবে না। কিডনি রোগীদের জন্য বাঁধাকপি অনেক উপকারী। কারণ এটি ক্যান্সার সংক্রমণের প্রতিরোধ করে। যারা ডায়ালাইসিস করে তাদের কে কাঁচা বাঁধাকপি খাওয়ার পরামর্শ দেয় চিৎকিসিরা।

কুমড়ার বীজ

আমরা সকলেই কুমড়া খেয়ে বীজ গুলো ফেলে দেই। কিন্তু এই বীজ কিনডির জন্য অনেক উপকারি। এতে রয়েছে ফাইবার, তামা, প্রোটিন, ভিটামিন-ই এবং আয়রন যা মূত্রথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায় এবং এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

পেঁয়াজ

পেঁয়াজ কিডনির রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। এতে রয়েছে কোরেস্টিন এবং ফ্লেভোনয়েডস যা রক্তনালীতে ফ্যাট জাতীয় উপাদান জমা হতে বাঁধা দেয়। এতে আরো রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদরোগ হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে ক্রোমিয়াম রয়েছে, যা প্রোটিন, শর্করা ও ফ্যাট বিপাক করতে সাহায্য করে।

ফুলকপি

বাঁধাকপির মতো ফুলকপি ও শীতকালীন একটি সবজি। এতে রয়েছে ফোলেট, ভিটামিন-ই এবং ফাইবার যা লিভারের জন্য অনেক উপকারি। ফুলকপি কাঁচা, সিদ্ধ বা সালাদ হিসাবে খেতে পারেন।

আপেল

আপেল খনিজ, ফাইবার এবং ভিটামিনের উৎস। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য যা ক্যানসার, খারাপ কলস্টেরল, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ হ্রাস করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে কিডনি রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারেন। আপেল রান্না করে বা কাঁচা খেতে পারেন।

শসা

শসাতে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা শসা যোগ করতে পারেন। কারণ শসা প্রস্রাবের উৎপাদনকে উৎসাহিত করে যা কিডনি ভালো রাখতে এবং কিডনিতে পাথর রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

কিডনির সুস্থতায় খাওয়া উচিত নয়

আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ করি। আর সেই সকল খাবার কিডনির সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে। কারণ এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো কিডনির জন্য অনেক ক্ষতিকর। যেমন:

বাদাম

বাদাম একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। তবে সব ক্ষেত্রে বাদাম খাওয়া উচিত নয়। কারণ কিডনিতে পাথর হওয়ার জন্য বাদামের ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া বাদামে অক্সালেট রয়েছে যা কিডনির অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে। যদি আগে কারো কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে তাহলে তার বাদাম খাওয়া উচিত নয়। বাদামের সাথে সাথে অক্সালেটযুক্ত খাবার যেমন- আলুর চিপস বা ফেঞ্চ ফ্রাইস খাওয়া উচিত নয়।

কফি

গবেষণায় দেখা গেছে অনেক দিন ধরে ক্যাফেইন গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেরে যায়। এক কাপ কফিতে প্রায় ৬০-৭০ মিলিলিটার ক্যাফেইন থাকে। এছাড়া ক্যাফেইন রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। ক্যাফেইন জাতীয় যে কোনো খাবারই কিডনির জন্য অনেক ক্ষতিকর।

দুগ্ধজাত খাবার

দুগ্ধজাত পণ্য বলতে বোঝায় ঘি, দুধ, দই, পনির ইত্যাদি খাবারকে। এই খাবার গুলো প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বারিয়ে দেয়। বিশেষ করে যারা কিডনি রোগে আগে থেকেই আক্রান্ত রয়েছেন তারা এই খাবার গুলো একদম খাবেন না।

আর যারা এখনও কিডনি রোগে আক্রান্ত হননি তারা এই খাবারগুলো কম পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এই জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যা কিডনি রোগের ওপর প্রভাব ফেলে।

লবণ

লবণ একদম খাওয়া যাবে না এমন নয়। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে, যা পটাশিয়ামের সাথে মিশে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং কিডনির কার্যক্রম সঠিক রাখে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম কিডনির জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মাত্রায় লবণ খাওয়ার কারণে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়। যার কারণে কিডনি নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এজন্য সকলের পরিমাণ মতো লবণ খাওয়া উচিত।

মাংস

মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। যা আমাদের শারীরিক বৃদ্ধি, মেটাবোলিজম, মাংসপেশি এবং কিডনি সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। তবে উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তাই কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার কম বা না খাওয়ার পরামর্শ দেয় ডাক্তারা।

নোট: তবে এই খাবার গুলো একদম বাদ দিয়ে দিবেন না খাদ্য তালিকা থেকে। এই খাবার গুলো পরিমিত পরিমাণে খাবেন এতে শরীরের ক্ষতি হবে না বরং ভালো হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url