দ্রুত মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়, ব্যায়াম ও দোয়া

দ্রুত মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়

মাসিক নিয়মিত বা সঠিক সময়ের মধ্যে না হওয়ায় অনেক কারণ থাকতে পারে। কারণগুলো হল অতিরিক্ত চিন্তা করা, ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া, পিসিওডির সমস্যা ইত্যাদি কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। তবে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম মাসিক দেরিতে বা অনিয়মিত হওয়ার প্রধান কারণ। এটি মহিলাদের শরীরের এনড্রোজেন হরমোন বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে ওভারিতে সিস্টের জন্ম হয়। যার কারণে ডিম্বস্ফোটনের প্রক্রিয়ায় দেরি হয় এবং মাসিক হতে দেরি হয়।

প্রাকৃতিক উপায়ে মাসিক হওয়ার উপায়

টকজাতীয় ফল খেয়ে প্রাকৃতিক উপায়েয় মাসিক নিয়মিত করতে পারেন। তেঁতুল, মাল্টা, জলপাই মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করে।

মাসিকের চক্রকে ঠিক রাখতে বা নিয়মিত করতে চাইলে আদা খেতে পারেন। কারণ আদা মাসিক নিয়মিত করতে বেশ কার্যকরী ভূমিক পালন করে। এক আথবা দুই চা চামচ আদা কুচি এক কাপ পানিতে মিশিয়ে ৫ থেকে ৭ মিনিট ধরে সিদ্ধ করে নিন। প্রতিদিন তিনবেলা খাবার খাওয়ার পর এটি পান করুন। নিয়মিত এক মাস এটি পান করুন অনিয়মিত মাসিক ঠিক হয়ে যাবে।

তিল অনিয়মিত মাসিককে নিয়মিত করতে সাহায্য করে। তিলে থাকা উপাদান হরমোন উৎপাদন করতে সাহায্য করে। অল্প পরিমাণে তিল ভেজে গুঁড়ো করে নিন। তারপর তার সাথে এক চামচ গুড় মিশিয়ে নিন। এটি রোজ সকালে খালি পেটে এক চা চামচ করে খান উপকার পাবেন।

একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়

আপনি জানলে আশ্চর্য হতে পারেন কিন্তু এটা সত্যি যে সহবাস করলে মাসিক দ্রত হয়। আপনি যদি বিবাহিত হয় তাহলে আবশ্যয় নিয়মিত সহবাস করুন।

পেঁপে এমন একটি ফল যেটি খেলে আপনার মাসিক দ্রুত হয়ে যাবে। মাসিক দ্রুত করার জন্য একটা পাকা পেঁপে নিন তারপর সেটা দিয়ে জুস তৈরি করে পুরুটা খেয়ে নিন পর্বরতী ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাসিক হয়ে যাবে। পেঁপেতে ভরপুর ভিটামিন রয়েছে, অন্যান্য পুষ্টির সাথে এর মধ্যে ক্যারোটিন পাওয়া যায় যা মাসিক আনতে সাহায্য করে। আসলে পেঁপে খেলে ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন প্রসারিত হয়ে যায়। যে কারণে গর্ভবতী মহিলাদেরকে পেঁপে খেতে বারন করা হয়। কারণ পেঁপে খেলে বর্ভপাত হয়ে যায়।

দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল দ্রুত মাসিক হওয়া সুনিশ্চিত করে। ভিটামিন সি লেবু, কমলালেবু, টমেটো, ব্রোকলি, মাল্টা, কিবি ফল, জলপাই,পার্সলে ইত্যাদিতে খুব সহজে পাওয়া যায়।

বোতলে হালকা গরম জল নিয়ে তল পেটে প্রত্যেকদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত সেঁক দিন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে আপনার মাসিক শীঘ্র শুরু হবার সম্ভাবনা থাকে।

আপনি যদি ঋতুস্রাবকে সময়ের আগে আনতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিদিন দু-কাপ করে আদা দিয়ে চা পান করতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই এটা খুব সহজ উপায়, কিন্তু অনেকেরই চা খেতে ভাল লাগে না। তারা প্রতিদিন সকালে আদা দিয়ে গুড় খেতে পারেন উপকৃত হবেন।

চিন্তা থেকে যত দূরে থাকবেন রোগ থেকে তত মুক্ত থাকতে পারবেন।

কি খেলে মাসিক তাড়াতাড়ি হয়

টক জাতীয় ফল বা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল বেশি বেশি খেলে মাসিক তাড়াতাড়ি হয়। এছাড়াও পেঁপে খুবি কার্যকারী ও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে মাসিক তাড়াতাড়ি আনতে।

দু কাপ জলে মধ্যে এক চা চামচ ধনের বীজ দিয়ে ভালো ভাবে ফুটিয়ে নিন। ফুটান্ত জল অর্ধেক হয়ে আসলে নামিয়ে নিন। তারপর সেটিকে ছেঁকে দিনে তিন বার করে পান করুন মাসিক তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।

এক গ্লাস জলে আল্প পরিমান মেথি বীজ দিয়ে ফুটিয়ে নিন এবং সেটিকে ছেঁকে পান করুন মাসিক তাড়াতাড়ি চলে আসবে।

রাতে শোবার আগে এক গ্লাস জলে চা চামচের দু চামচ মৌরি ভিজিয়ে রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে খালি পেটে তা পান করুন মাসিক তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।

টক খেলে কি মাসিক তাড়াতাড়ি হয়

অনেকেই জানতে চান টক বা টকজাতীয় ফল খেলে মাসিক হয় কিনা? হ্যা টক খেলে মাসিক তাড়াতাড়ি হয়। টকজাতীয় ফল যেমন- তেঁতুল, জলপাই, মাল্টা, চালতা, আমড়া, লেবু, কমলা ইত্যাদি ফল মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করে।

তেঁতুল চিনি মেশানো পানিতে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর তার সাথে চিনি, লবণ ও জিরা গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি দিনে দুবার পান করুন।

দ্রুত মাসিক হওয়ার ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম করলে অনেক সমস্যা থেকে ও রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। যেসব মেয়েরা নিয়মিত ব্যায়াম করে তাদের কখনো মাসিকের সমস্যা হয় না। মাসিকের নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম রয়েছে, সেগুলো করলে অনেক সময় দ্রুত মাসিক হয়ে যায়। যেমন নাচলে বা লাফালে অনেক সময় মাসিক হয়ে যায়।

দ্রুত মাসিক হওয়ার দোয়া বাংলায়

মেয়েদের জীবনে মাসিক একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। উঠতি বয়সী মেয়েরা সাধারণত মাসিক নিয়ে বেশি ভয় পেয়ে থাকে। কিন্তু অনেকেই মাসিক এর বিষয় নিয়ে পরিবারের সদস্য যেমন মা, বোনদের কাছেও বলতে লজ্জা পায়। আবার অনেকে মনে করেন মাসিক হচ্ছে না এটা কেউ জানলে হয়তো তাকে খারাপ ভাবতে পারে। সত্যি বলতে এখানে খারাপ ভাবা বা লজ্জা পাওয়া কিছু নেই এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়। বর্তমানে অনেক মা-বোনেরা এই সমস্যায় ভুগছেন। এর কারণ অনেক থাকতে পারে এবং দেরি করে মাসিক হওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিকও হতে পারে আবার অস্বাভাবিকও হতে পাতে। অনেক সময় আবহওয়া পরিবর্তন বা ঋতু পরিবর্তনের জন্য মাসিক দেরি করে হতে পারে এটা খুবি সাধারন বিষয়। কিন্তু একটানা অনেক দিন অনিয়মিত মাসিক হলে বুঝতে হবে শরীরের কোনো সমস্যা আছে। তাই বলে ভয় পেতে হবে বিষয়টি এমন নয় যদি আপনার অনিয়মিত মাসিক দেখা দেয় তাহলে ভয় না পেয়ে আল্লাহের কাছে মাপ চেয়ে দোয়া করতে পারেন। নিয়মিত দোয়া ও নামাজ পড়লে ইনশাল্লাহ সমাধান পাবেন। দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য নিচের এই আয়াতটি প্রতিদিন নামাজ পড়ার পরে পড়বেন, আশা করছি সুফল পাবেন।

আরবি: صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ (১৮)

বাংলা উচ্চারণ: সুম্মুম বুকমুন ‘উমইয়ুন ফাহুম লা-ইয়ারজি‘ঊন। (সূরা আল বাকারা, আয়াত: ১৮)

নোট: যদি নামাজ কালাম করার পড়েও মাসিক অনিয়মিত হতে থাকে, তাহলে আবশ্যয় ভালো একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞর শরনাপন্ন হবেন।

তার আথে এটাও মনে রাখবেন একবার মাসিক দেরিতে হলে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। তবে মাসিকের দিকে খেয়াল রাখুন। বছরে ৯ বারের কম মাসিক হলে বা একটানা তিন মাস মাসিক না হলে আথবা প্রতিবার মাসিক হওয়ার মাঝে ৩৫ দিনের বেশি বিরতি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের শরনাপন্ন হবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url