মহেশখালী দ্বীপ, দর্শনীয় স্থান, আদিনাথ মন্দির

মহেশখালী দ্বীপ

আমরা যারা ভ্রমণ পিপাসু আছি তারা একটু সময় পেলে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা ঘুরে বেড়ায়। ভ্রমণ করার জন্য কক্সবাজারের তুলনা হবে না। সেই কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় রয়েছে মনোমুগ্ধকর একটি দ্বীপ। আপনি যদি কক্সবাজার ঘুরতে যান তাহলে অবশ্যই মহেশখালী দ্বীপে ঘুরতে ঝাবেন। যাইহোক আজকে আমরা আপনাদের সাথে মহেশখালী দ্বীপ, ব্রিজ, দর্শনীয় স্থান, আদিনাথ মন্দির ও কিসের জন্য বিখ্যাত সব কিছু আলোচনা করব।

মহেশখালী দ্বীপ:

মহেশখালী দ্বীপ হল বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার একটি পাহাড়ি দ্বীপ। বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ হচ্ছে মহেশখালী দ্বীপ। কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে সাগরের মাঝে অবস্থিত এই দ্বীপ।

মহেশখালী দ্বীপ পান ও লবণ ব্যবসার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। মাছ, চিংড়ি, শুঁটকী, লবণ, পান এবং মুক্তার উৎপাদন এই দ্বীপকে দিয়েছে আলাদা এক পরিচিতি। বাংলাদেশ সরকার গ্যাস সংকট হ্রাস করতে মহেশখালী দ্বীপে দুটি এল.এন.জি টার্মিনাল এফ.এস.আর.ইউ এবং গ্যাস পাইপলাইন তৈরি করার পরিকল্পনা করেছেন।

মহেশখালী দর্শনীয় স্থান

  1. আদিনাথ মন্দির
  2. আদিনাথ ও গোরকঘাটা জেটি
  3. সোনাদিয়া দ্বীপ ও সমুদ্র সৈকত
  4. মাতার বাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র
  5. মাতার বাড়ী সমুদ্র সৈকত
  6. ধলঘাটা হাঁসের চর
  7. স্বর্ণ মন্দির
  8. মৈনাক পর্বত
  9. বড় রাখাইন পাড়া বৌদ্ধ মন্দির
  10. লিডারশীপ ইউনিভার্সিটি কলেজ
  11. লবণ মাঠ
  12. শুটকি মহাল
  13. গোরকঘাটা জমিদার বাড়ী
  14. উপজেলা পরিষদ দীঘি
  15. শরইতলা সী-বিচ
  16. চরপাড়া সী-বিচ
  17. প্যারাবন
  18. চিংড়ী ঘের
  19. মুদির ছড়া, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বন
  20. মুদির ছড়ার বটগাছ

মহেশখালী কিসের জন্য বিখ্যাত

মহেশখালীর মিষ্টি পানের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও মাছ, চিংড়ি, শুটকি, লবণ এবং মুক্তার উৎপাদনের জন্য বেশ পরিচিতি রয়েছে।

মহেশখালী আদিনাথ মন্দির

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা ইউনিয়নের ঠাকুরতলা গ্রামে আদিনাথ মন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দিরটি মৈনাক পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত এবং সমুদ্র-সমতল থেকে প্রায় ৮৫.৩ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এই মন্দিরটিতে উঠতে হয় সমতল থেকে ৬৯টি সিঁড়ি ভেঙে। আদিনাথের অপর নাম হল মহেশ।

প্রতিদিনই নিয়ম মোতাবেক এই মন্দিরে পূজো-অর্চনা হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রতি বৎসর ফাল্গুন মাসে শিব চতুর্দ্দশী তিথিতে বিশেষ পূজো-অর্চনা ও ১ মাস ব্যাপী মেলা হয়। এই সময় মনস্কামনা পূর্ণ করার জন্য এবং পুণ্য সঞ্চয় করতে উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ জন এসে মন্দির প্রাঙ্গণ মুখরিত করে। বলা হয় যে একবার এই মন্দিরে গিয়ে বাবার দর্শন করলে তার মনের সকল ইচ্ছে বাবা পূর্ন করে দেন। এই মন্দিরে একটি পারিজাত ফুলগাছ রয়েছে তাতে ভক্তগণ প্রতিনিয়ত মনস্কামনা পূরণার্থে মানত করে সূতা বেঁধে রেখে যান। পরে মনস্কামনা পূর্ণ হলে ভক্তগন গিয়ে সুতা খুলে দেন এবং ভক্তি ভরে পূজা আর্চনা করেন। মূল মন্দিরের পেছনের দিকে দুটি পুকুর রয়েছে। পুকুর দুটির অবস্থান সুমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ২৮০ ফুট উচ্চতায় হলেও এর জল কখনই শুকায় না। বিশ্বাস করা হয় যে, এই দুটি পুকুরের মধ্যে একটিতে স্নান করলে দেহের সকল রোগ দূর হয়ে যায়। তাছাড়াও এখানে ভক্তদের জন্য বিশ্রামের জায়গাও রয়েছে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url