কম কথা বলার ৮ টি উপকারিতা
কম কথা বলার গুরুত্ব ও উপকারিতা অনেক বেশি এবং যারা কম কথা বলে তাদেরকে মানুষ অনেক বেশি পছন্দ করেন। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, দেখবা শুনবা কবা না কোনো আপদে পরবা না অর্থাৎ বোবা মানুষের শত্রু থাকে না। আসলে কথা টা সম্পূর্ণ সত্য। শুধু শত্রুতা নয়, কম কথা বলার ফলে আপনি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকেও সুরক্ষিত থাকবেন। কম কথা বলার উপকারিতা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল।
কথা কম বলার উপকারিতা
অনেকেই মনে করেন যে যারা কম কথা বলে তারা অসামাজিক বা হিংসুটে প্রকৃতির মানুষ হয়ে থাকে। কিন্তু আপনি যানেন কি কথা কম বলার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। আজকের এই পোষ্টে কম কথা বলার ৮ টি উপকারিতা তুলে ধরা হলো-
- দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ
- মানসিক চাপ কমায়
- হার্ট ভালো থাকে
- সম্পর্ক ভালো থাকে
- শত্রুতা হ্রাস পায়
- ভালো ঘুম হয়
- কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়
- সফলতা বেশি আসে
উপরের উল্লেখিত উপকারিতা গুলো নিচে আলোচনা করা হলো-
দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ:
একটি নফল ইবাদত হল কম কথা বলা। ইসলামিক ধর্ম মতে মানুষের কল্যাণের জন্য, কম কথা বলার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাছাড়াও সব মানুষ বেশি কথা শুনতে বা বেশি কথা বলা মানুষকে পছন্দ করে না। ফলে যারা বেশি কথা বলে তারা মনে মনে অনেক কষ্ট পায়, কারণ বেশি কথা বলার জন্য মানুষ তাদেরে এযিয়ে চলে। বেশি কথা বলার মাধ্যমে যেমন অন্যকে বিরক্ত করা হয়, ঠিক তেমনি নিজেরও ক্ষতি হয়, তাই আমাদের সকলেরই প্রয়োজনের থেকে বেশি কথা কথা বলা উচিত নয়।
মানসিক চাপ কমায়:
অনেক সময় অতিরিক্ত কথা বলার কারণে মানুষের মানসিক চাপ বেড়ে যায়, ফলে শারীরিকের উপরও এর প্রভাব পড়ে। তাই কম কথা বলুন, আর মানসিক চাপ কমাতে নির্জন স্থানে গিয়ে কিছু সময় বসে থাকুন। কারণ, নিঃশব্দ মস্তিষ্কে শান্তি প্রবাহিত করে, ফলে মানসিক চাপ কমে যায়।
হার্ট ভালো থাকে:
অতিরিক্ত কথা বলার ফলে শরীরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, ফলে হার্টবিট বাড়তে থাকে। আর হার্টবিট অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি যদি চুপ থাকেন বা কম কথা বলেন তাহলে স্ট্রেস কমতে শুরু কমে যাবে এবং হার্ট ভালো থাকে। হার্ট ভালো রাখতে চাইলে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ মিনিট একেবারে চুপ থাকার চেষ্টা করুন এবং এর পাশাপাশি মন খুলে হাসুন, শরীর ও মন দুই এই ভালো থাকবে।
সম্পর্ক ভালো থাকে:
আপনি যত কম কথা বলবেন তত আপনার শত্রু কম থাকবে। যখনি আপনি বেশি কথা বলবেন, তখনি হয়তো আপনি সত্যি কথা বলে ফেলবেন বা মিথ্যা কথা বলা শুরু করবেন। মিথ্যা কথা বলার ফলে মানুষ আপনাকে আবিশ্বাস করতে শুরু করবে, আবার সত্যি কথা বললেও মানুষ (যার ব্যাপারে বলবেন) আপনাকে শত্রু ভাবতে শুরু করবে। কম কথা বললে কারো সাথে কোনো প্রকার ঝামেলা হবার সম্ভবনা থাকবে না বরং সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।
শত্রুতা হ্রাস:
কম কথা কম ভূল, বেশি কথা বেশি ভুল। যখনি আপনি ভুল কথা বা মিথ্যা কথা বলেন তখনি আপনার সাথে অন্যদের ঝামেলা হবার সম্ভবনা বেড়ে যাবে এবং আপনার শত্রু বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আর যদি আপনি কম কথা বলবেন তখন আপনার সাথে এমন ঝামেলা হবার সম্ভবনা থাকবে না এবং আপনার শত্রু অনেক কমে যাবে।
ভালো ঘুম হয়:
ঘুমের সাইকেলকে স্বাভাবিক করে নীরবতা। বেশি কথা বলার ফলে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। যার কারণে অনেকের অনিদ্রা দেখা দেয়। মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখার জন্য আমাদের সবার কম কথা বলতে হবে। আর মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকলে ঘুমও ভালো হয়।
কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করে:
কাজে মনোযোগ বাড়াতে চাইলে আবশ্যয় কথা কম বলতে হবে। আপনি যদি কম কথা বলা শিখতে চান তাহলে আপনি যোগ ব্যা়য়াম অনুশীলন করতে পারেন। এতে করে আপনার কম কথা বলা শিখতে পারবেন পাশাপাশি কর্ম দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। আপনি যত কম কথা বলবেন বা যত নিরব থাকবেন আপনার কর্ম দক্ষতা প্রতিনিয়ত ততই বাড়তে থাকবে।
সফলতা বেশি আসে:
কিছু মানুষ আছে যারা সব সময় বেশি কথা বলে। এমনকি কাজের সময় কাজে মন না দিয়ে কথা বলার দিকেই তার বেশি খেয়াল। আর যে মানুষের কাজের থেকে বেশি কথা বলতে পছন্দ করে, সে সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারে না।আর যারা কম কথা বলে তারা কাজের প্রতি বেশি আগ্রহী হয় এবং তার কাজ সে সঠিক সময় সঠিক ভাবে শেষ করতে সক্ষম হয়, কর্ম জীবনে সফলতা লাভ করতে পারবেন।
নোট: কম কথা বললে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা সঠিক থাকে এবং আপনি যখন কোনো কথা বলবেন তার আগে চিন্তা করে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। যারা কম কথা বলে এবং সব সময় চুপচাপ থাকে, তাদের মস্তিষ্ক অনেক দ্রুত কাজ করে। তারা কোনো একটি ব্যাপারে নিজেদের মত প্রকাশ করার আগে নিজেকে শান্ত রেখে চিন্তা ভাবনা করে কথা বলে থাকেন। আর এর ফলে তিনি কোনো ভূল সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে। কেননা যারা বেশি কথা বলে এবং কোনো প্রকার চিন্তা ভাবনা ছাড়াই কথা বলে, তারা বার বার ভূল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।