কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে

কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে

সবাই শুধু ওজন কমাতে চাই না, কেউ কেউ ওজন বাড়াতেও চায়। অনেকে সঠিক সুষম খাদ্য গ্রহণ করে না বলে কাঙ্খিত ওজন হয় না। তাই তারা ভিটামিন ক্যাপসুলের মাধ্যমে ওজন বৃদ্ধি করতে চাই। এতে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপতিক্রীয়া দেখা দিতে পারে। তাই আপনারা যদি চান, তাহলে ভিটামিন ক্যাপসুলের বদলে ভিটামিন জাতীয় খাবার খেয়ে শরীরের ওজন বাড়াতে পারেন। এতে শরীরের ওজন বাড়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়বে।

ওজন বাড়ানোর ভিটামিন

ওজন বাড়াতে চাইলে আপনাকে প্রতিদিনের ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। নিচে কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে তা তুলে ধরা হলো-

ওজন বাড়ানোর ঔষধ

অনেকেই ওজন বাড়ানোর ঔষধ খেয়ে শরীরের ওজন বাড়াতে চান। কিন্তু এতে শরীরের উপর পার্শ্বপতিক্রীয়া পারতে পারে। তাই আপনারা নিম্নে উল্লেখ করা ঔষধ গুলো সেবন করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করবেন।

  • গুড হেলথ ক্যাপসুল (Good Health Capsule)
  • সিনকারা সিরাপ (Cinkara Syrup)
  • আলফালফা হোমিও ঔষধ
  • ভিটামিন ক্যাপসুল (Vitamin capsules)

যে সকল খাবার খেলে ওজন বাড়ে

নিয়মিত কলা, কিশমিশ, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, খিচুড়ি, আলু, ডাল, বাদাম, মুরগির মাংস, ভাত ও ভাতের মাড় খেলে ওজন বাড়ে। নিচে খাবার গুলোর উপকারিতা সমূহ তুলে ধরা হলো-

কিশমিশ

কিশমিশ ওজন বাড়ানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা রোদেের সাহায্য শুকানো আঙ্গুর ফলকেই কিশমিশ বলে। এই শুকানো আঙ্গুর ফলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে যেমন- ভিটামিন বি-৬, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ফ্লোরাইড, ক্যালসিয়াম, নিয়াসিন, ফোলাট, কপার, লৌহ, পটাশিয়াম, জিংক, কোলিন এবং রিবোফ্লাবিন জাতীয় পুষ্টিগুণ। এই উপাদান গুলো যেমন আমাদের শরীরের বাড়তি শক্তি যোগান দেবে তেমনি ওজন বাড়াতেও সাহায্য করবে। তাই প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ১ গ্লাস পানিতে কয়েকটা কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন এবং পরের দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে খালি পেটে খেয়ে নিন।

কলা

কলা অতি জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও পর্যাপ্ত খাদ্যশক্তি রয়েছে। কলা আমাদের প্রত্যেকের প্রতিদিন খাওয়া উচিত।

দুধ

দুধে শরীরের প্রয়োজনীয় সকল ধরনের পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। আর দুধে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ফ্যাটি এসিড, লিপিড, ল্যাক্টোজ, এ্যামিনো এসিড এবং ভিটামিন বি-১২। আর এই উপাদান গুলো শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। দুধ খাবারের ৪০ মিনিট পর সকাল, দুপুর বা রাতে যেকোনো সময় এক গ্লাস খেতে পারেন।

মাছ

প্রতিদিনের খাবারে অব্যশই মাছ রাখবেন। কারণ মাছে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন, পটিশিয়াম, ফসফরাস, আ্যমাইনো এসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন ‘এ’ ও ‘বি’। আর এই উপাদান গুলো স্বাস্থ্যকর ভাবে শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

বাদাম

বাদাম আমাদের কাছে খুবেই পরিচিত একটি খাবার। বাদামে প্রচুর ক্যালরি, ফাইবার, প্রোটিন এবং ভিটামিন ই রয়েছে। বাদাম ওজন বৃদ্ধি করতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন খাবারের পরে এক মুঠো বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

ডাল

যে পরিমাণ প্রোটিন গরু ও খাসির মাংসে থাকে সেই পরিমাণ প্রোটিন ডালের মধ্যে বিদ্যামান রয়েছে। গরু ও খাসির মাংসতে ক্ষতিকর চর্বি থাকে কিন্তু ডালে তা থাকে না। এছাড়া ডালের মধ্যে থাকে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ সহ আরো অনেক পুষ্টিগুণ। তাই খাবারের তালিকায় ডাল রাখতে পারেন। কারণ ডালের মধ্যে যে উপাদান গুলো থাকে সেগুলো ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু মাথায় রাখবেন পাতলা ডালের চেয়ে ঘন ডাল বেশি উপকারি।

ডিম

ডিম একটি সহজ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। ডিম বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যেতে পারে। এতে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে, যা শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। যেটি ওজন বৃদ্ধি করতে বেশ কর্যকারী।

ভাত ও ভাতের মাড়

আশা করি আমাদের মাঝে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে দিনের মধ্যে একবারও ভাত খায় না। ভাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে কার্বো-হাইড্রেড, যেটি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া ভাতের মাড় ওজন বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। তাই ভাতের মাড়ের সাথে হালকা লবণ মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেতে পারেন।

মুরগির মাংস

দুপুরের খাবারের তালিকায় মুরগির মাংস রাখতে পারেন। অনেক দিন পর পর বেশিকরে মাংস না খেয়ে প্রতিদিন দুই টুকরা করে মুরগির মাংস খেতে পারেন। কারণ মাংসের ভিতরে থাকা উপাদান গুলো ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। আবার অনেকে গরু ও খাসি মাংস খেতে পরামর্শ দিতে পারে। কিন্তু ভুলেও এই কাজটি করবেন না কারণ গরু ও খাসির মাংসে প্রোটিনের পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর চর্বিও থাকে। যার কারণে স্বাস্থ্যর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ওজন বাড়ানোর সময় নিয়মিত গরু ও খাসির মাংস না খাওয়া ভালো। আর গরু ও খাসির মাংসতে যে প্রোটিন থাকে তা মুরগির মাংস, ডিম, দুধ ও ডাল থেকে পেয়ে যাবেন।

খিচুড়ি

খিচুড়ি যে পুষ্টিকর খাবার এই কথাটা আমরা সকলেই জানি। এই খিচুড়িতে থাকে কার্বোহাইড্রেড, প্রচুর ভিটামিন-সি, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, খাদ্যআঁশ ও অ্যামাইনো। আর এই উপাদান গুলো মধ্যে থেকে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ওজন বাড়ানোর জন্য মাঝে মাঝে খিচুড়ি খেতে পারেন।

আলু

আমাদের সকলের বাড়িতে প্রায় সকল রান্নার সাথে আলু যোগ করা হয়। আর এই আলুর মধ্যে রয়েছে শর্করা, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। তাই প্রতিদিনের খাবারের সাথে আলু যোগ করলে স্বাস্থ্যকর ভাবে শরীরের ওজন বেড়ে যাবে। তাই প্রতিদিন যেকোনো সবজির সাথে আলু যোগ করুন অথবা দুইটি আলু সুদ্ধা করে হালকা লবন দিয়ে খেতে পারেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url