হালদা নদীর বিস্তারিত তথ্য

হালদা নদীর বিস্তারিত তথ্য

হালদা নদীর বিস্তারিত তথ্য:

দেশ: বাংলাদেশ
অঞ্চল: চট্টগ্রাম বিভাগ
জেলাসমুহ: খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম
উৎপত্তিস্থল: বাটনাতলী ইউনিয়ানের পাহাড়ি এলাকা
মোহনা: কর্ণফুলী নদী
দৈর্ঘ্য: ১০৬ কিলোমিটার
প্রস্ত: ১৩৪ মিটার

হালদা নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায় অবস্থিত?

হালদা নদীর উৎপত্তিস্থল হল চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের বাটনাতলী পাহাড়ে অবস্থিত। এখান থেকে উৎপত্তি হয়ে ফকিরহাটের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছেন। এর পরে দক্ষিণ - পশ্চিমে ও পরে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে নাজির হাট, ফটিকছড়ির বিবিরহাট, সাত্তারঘাট, নাজিরহাট এবং অন্যান্য অংশ রাউজান, হাটহাজারী ও চট্টগ্রাম শহরের মাঝে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এটি কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট নামক একটি স্থানে মিলিত হয়েছে।

হালদা নদী কোথায় অবস্থিত?

হালদা নদী চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত। এই নদীর মোট দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার যার ২৯ কিলোমিটার ছাড়া বাকি সব স্থানে সারাবছর নৌ চলাচল করতে পারে। হালদা নদী এই পৃথিবীর এক মাত্র জোয়ার ভাটার নদী যেখানে রুই মাছ ডিম ছাড়ে এবং এখান থেকে নিষিদ্ধ ডিম সংগ্রহ করা হয়। এই নদীটি শুধু মাত্র মৎস্য প্রজননের জন্যই ঐতিহ্য নয়, বরং এই নদীটি বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য রাখে।

হালদা নদীর নাম করণ:

হালদা নদীটি মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়ানের পাহাড়ি গ্রাম সালদা নামক স্থানে উৎপত্তি হয়। সালদা পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণা থেকে এই নদীর নামকরণ করা হয় হালদা। তবে বাংলাদেশে হালদা নামে আরো একটি নদী আছে যার উৎপত্তিস্তল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। নদীটি ত্রিপুরা রাজ্যে উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

হালদা নদীর উপনদী:

এই নদীর উপনদী গুলোকে প্রশস্ততার দিক থেকে উপনদী বলা যায় না, আবার এই নদীর উপনদী গুলো দেখতে ছড়া, ঝোড়া, খাল বা ঝর্না জাতীয় কিন্তু মানিকছড়ির সর্তা ও ধুরুং বেশ প্রশস্ত। পূর্ব দিক থেকে যে সব খাল হালদা নদীর সাথে মিতিল হয়েছে তার বেশির ভাগ পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়েছে। আর পশ্চিম দিক থেকে যে খাল গুলো হালদার সাথে মিলিত হয়েছে তা সীতাকুণ্ড পাহাড় হতে উৎপত্তি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে যে খাল গুলো উৎপত্তি হয়েছে তা হলো: মানিকছড়ি, তেলপাইর, সর্তা, ধুরুং, ডোমখালী ও কাগতিয়া খাল। আর সীতাকুণ্ড থেকে যে সব খাল গুলো উৎপত্তি হয়েছে তা হলো: ফটিকছড়ি, গজারিয়া, বারমাসিয়া, হারুয়ালছড়ি, বোয়ালিয়া, পোড়া কপালী ও মন্দাকিনী খাল।

মাছের ডিম ছাড়া:

হালদা নদীতে প্রতিবছর একটা বিশেষ সময় মা মাছেরা ডিম ছাড়ে। বিশেষ করে কাতলা, রুই, কলিবাউস, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে। মা মাছেরা যখন ডিম ছাড়ে ওই সময় তাকে "তিথি" বলা হয়। মা মাছেরা সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাসে প্রতি পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় ডিম ছাড়ে তবে তার সাথে প্রচন্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে হবে। তবে এই বৃষ্টি শুধু নদীতে হলেই হবে না বরং তার উজানেও হতে হবে, কারণ পাহাড়ে ঢলের সৃষ্টি হবে। আর এই ঢলের কারণে পাহাড় থেকে নেমে আসবে খরস্রোতা ও ঘোলা পানি যা ফেনা আকারে প্রবাহিত হয়। ডিম ছাড়ার এই সময় কালকে স্থানীয়রা "জো" বলে। ডিম ছাড়ার সর্বশেষ বৈশিষ্ট্য হলো জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে। যখন পূর্ণ ভাটা শেষ বা পূর্ণ জোয়ার শেষ হয়ে পানি স্থির হয় তখনি মা মাছেরা ডিম ছাড়ে। মা মাছেরা ডিম ছাড়ার সময় প্রথমে অল্প ডিম ছাড়ে যদি দেখে যে ডিম ছাড়ার উপযুক্ত পরিবেশ তাহলে সম্পূর্ণ ডিম ছাড়ে আর যদি পরিবেশ ঠিক না থাকে তাহলে মা মাছ তার শরীলের ভিতরে ডিম গুলো নষ্ট করে ফেলে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url