কাঞ্চনজঙ্ঘার সংক্ষিপ্ত বিবারন - Brief description of Kanchenjunga

কাঞ্চনজঙ্ঘা

অনেকেই হয়তো কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নাম শুনেছেন আবার অনেকে পর্বতশৃঙ্গটি দেখার জন্য আধীর আগ্রহ নিয়ে দিন জাপন করছেন। পর্বতশৃঙ্গটি যেহেতু নেপালে আবস্থিত তাই সাদ থাকলেও সবার স্বাদ্ধে কুলোয় না, যে কারণে মনে প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্বেও স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে দেখতে পারছেন না। কিন্তু আপনি যদি সত্যি সত্যিই দূর থেকে হলেও কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গটি একবার হলেও দেখতে চান, তাহলে আর দেরি না করে এখনি চলে যান রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট। সেখান থেকে আপনি কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গের অপরূপ সুন্দর্য দেখতে পাবেন। তবে, আপনি দাড়িয়ে থাকবেন বাংলাদেশে, আপনার পাঁচ জগ সামনে ভারত আর দূরে মাথা উচু করে অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ। আপনি যদি পর্বতটি দেখার মন স্থির করে থাকেন তাহলে আপনার কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া উচিত। এতে করে আপনার অনেক সুবিধা হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা কোথায় অবস্থিত?

কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতটি ভারত - নেপাল সীমান্ত ঘেঁষে অবস্থিত। পর্বতটি নেপালের উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। এটি নেপালের পূর্বাঞ্চলে এবং ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতটি হিমালয় পর্বতের একটি অংশ। এই পর্বতের পূর্বে তিস্তা নদী, পশ্চিমে তামুর নদী, উত্তরে লহনাক চু নদী এবং জং সং লা পর্বতশৃঙ্গ। কাঞ্চনজঙ্ঘা মাইন্ড এভারেস্ট থেকে ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ - পূর্ব দিকে অবস্থিত।

কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সর্ব উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ মানা হত। কিন্তু ১৯৪৯ সালে ভারতের ত্রিকোণমিত্রিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা যায় যে, মাউন্ট এভারেস্ট পৃথিবীর প্রথম সর্ব উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ এবং সেই হিসাবে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তার কিছু দিন পরে পুনরায় পরীক্ষা - নিরীক্ষা করে জানা যায় যে, দ্বিতীয় পর্বতশৃঙ্গ হলো "কেটু" যার উচ্চতা ৮,৬১১ মিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গর উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার। যে কারণে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে তখন তৃতীয় পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের নাম করণ:

ধারণা করা হয় যে কাঞ্চনজঙ্ঘা শব্দটি একটি স্থানীয় শব্দ যা কাং, চেং, জেং ও গা থেকে এসেছে যার অর্থ তেনজিং নোরগে। তেনজিং নোরগে একজন লেখক তিনি তার "ম্যান অফ এভারেস্ট" বইতে উল্লেখ করেছেন "তুষারের পাঁচ ধনদৌলত"। কাঞ্চনজঙ্ঘার পাঁচটি চূড়া রয়েছে যার চারটি চূড়া ৮,৪৫০ মিটারের উপরে। আর এই পাঁচ চুরাকে ঈশ্বরের ধনদৌলত ভান্ডারের প্রতিনিধিত্ব করে যা পবিত্র পুস্তক, স্বর্ণ, শস্য, রত্ন ও রূপাকে উল্লেখ করে।

বাংলাদেশ থেকে পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সময় সূচী:

আপনি যদি পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা এসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে চান তাহলে আপনাকে যেতে হবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে। পর্বত টি দেখতে পাবেন সকল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা প্রযন্ত, আবার বিকালে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত।

কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে টানে

কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য দেখতে প্রতি বছরই পর্যটকেরা ভারতে ও হিমালয়ের দেশ নেপালে পাড়ি জমান। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের টাইগার হিলে দাঁড়িয়ে অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকেরা। কেউ কেউ আরো কাছ থেকে দেখার জন্য ছুটে যান নেপালেই। আর যারা ভারত বা নেপালের কোথায়ও যেতে পারেন না তারা স্বাধ পূরণ করতে ছুটে যান রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট। সেখান থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গের অপরূপ সুন্দর্য উপভোগ করা যায়।

মোহনীয় রূপে আচ্ছাদিত এই কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায়। ভোরে সূর্যোদয়ের সময় মনে হয় যেন কাঞ্চনজঙ্ঘা সাদা বরফে ছেয়ে গেছে। বেলা বাড়লে আবার সেই রূপ বদলায়। দিনের মধ্যভাগে মনে হয় প্রকাণ্ড মেঘ উত্তরের আকাশ দখল করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিকেলের কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন লজ্জারাঙা। আর গোধূলিবেলায় পুরো কাঞ্চনজঙ্ঘা আবির খেলায় মেতে ওঠে।

আশা করছি আপনারা সবাই কাঞ্চনজঙ্ঘার সুন্দর্য দেখে মুগ্ধ হবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url