বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র

বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নীলাচল

দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলার বান্দরবান সদর উপজেলায় অবস্থিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রটি। বান্দরবান শহর থেকে নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। টাইগার পাড়ায় পাহাড়ের উপর অবস্থিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রটি এবং এই পাহাড়ের উচ্চতা সমুদ্রের তলদেশ থেকে প্রায় ২,০০০ ফুট।

নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র থেকে পুরো বান্দরবান জেলা শহর দেখা যায়। যদি আকাশ মেঘ মুক্ত থাকে তাহলে দূরের কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতও দেখতে পাওয়া যায়, যা পর্যটকদের হাতছানি দেয়। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা সমানভাবে পর্যটকদের বিমোহিত করে তোলে। নীলাচলে বর্ষা, শরৎ ও হেমন্ত কালে মেঘ খেলা করে হাতের কাছে তাই এই সময়ে পর্যটকদের ঢল পড়ে এখানে।

নীলাচল ভ্রমণকাল:

নীলাচলে পর্যটকরা সকালের সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সন্ধ্যার সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করতে পারেন এবং সেখানে বিশ্রাম নিতে পারেন। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এখানে কয়েকটি বিশ্রামাগার রয়েছে। তবে যারা রাত্রি যাপন করতে চান শুধু তারাই সন্ধ্যার পর সেখানে থাকার অনুমতি পাবেন। যদি আপনারা মেঘের মেলা দেখতে চান তাহলে খুব সকাল সকাল যেতে হবে নীলাচলে। তবে আপনারা যদি আপনাদের ভ্রমণ বেশি আনন্দময় করতে চান তাহলে বর্ষা, শরৎ ও হেমন্ত কালে যাবেন।

নীলাচলে যাতাযাত ব্যবস্থা:

ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ থেকে বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায় অনেক গাড়ি। যেমন, শ্যামলী, সৌদিয়া, এস আলম, হানিফ সেন্ট মার্টিন ও ইউনিক পরিবহন। এই সব বাসের ভাড়া পরবে নন এসি ৫৫০-৬০০ টাকা আর এসি ৯০০-৯৫০ টাকা। যদি রাস্তায় কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে সময় লাগবে ৯-১০ ঘণ্টার মতন।

ঢাকা থেকে যদি ট্রেনে যেতে চান তাহলে আপনাকে যেতে হবে ঢাকা টু চট্টগ্রাম। ট্রেন থেকে নেমে বাসে করে যেতে হবে বান্দরবান। চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানের উদ্দেশে দুটি বাস ছেড়ে যায় পূর্বালী ও পুবালি নামে। এই বাসের ভাড়া পরবে ২২০ টাকার মতন এবং সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টার মতন।

নীলাচল যাবার জন্য বান্দরবান সদর থেকে সিএনজি, জীপ, চাঁদের গাড়ি পাওয়া যায়। গাড়ি রিজার্ভ করে নিলে ভাড়া নিবে অটোরিক্সা ৫০০-৯০০ টাকা, জীপ গাড়ি ১০০০-১২০০ টাকা, চাঁদের গাড়ি ১০০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত।

ভোজন ব্যবস্থা:

নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে যদি রাত্রি যাপন করেন তাহলে খাবারের ব্যাবস্থা হোটেল কর্তৃপক্ষ করবে। আর যদি সেটা না করেন তাহলে নীলাচল শুধুমাত্র "ফরেস্ট হিল" নামে একটা রেস্তোরাঁ আছে সেখানে খাবার খেতে পারেন। এছাড়া খাবার খাওয়ার মতন ভালো কোন ব্যবস্থা নেই। যদি ঐ হোটেলে খেতে না চান তাহলে আপনাকে বান্দরবান শহরে এসে খেতে হবে। বান্দরবান শহরে খাবার খাওয়ার মতন বেশ কিছু রেস্তোরাঁ আছে। যেমন:
  • তাজিং ডং ক্যাফে
  • মেঘদূত ক্যাফে
  • ফুড প্লেস রেস্তোরাঁ
  • রূপসী বাংলা রেস্তোরাঁ
  • রী সং সং রেস্তোরাঁ
  • কলাপাতা রেস্তোরাঁ
এই সকল রেস্তোরাঁ গুলোতে উন্নত মানের খাবার পাওয়া যায়।

রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা:

আপনি যদি নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট থাকতে চান তাহলে থাকতে পারবেন। এখানের তিনটি কটেজে রয়েছে এবং প্রতিটি কটেজে আবার দুটি করে রুম আছে। প্রতিটি রুমের ভাড়া পড়বে ২৮০০-৩০০০ টাকার মতন। নীলাচল কটেজে থাকতে হলে আগে থেকেই বুকিং করে রাখতে হবে, কারণ সব সময় রুম পাওয়া যায় না। আর যদি নীলাচল না থাকতে চান তাহলে বান্দরবান শহরটি নীলাচলের কাছে হবার কারণে সেখানে রাত্রি যাপন করতে পারেন। বান্দরবনে অনেক ভালো ভালো হোটেল বা রিসোর্ট আছে। যেমন:

১। হোটেল হিল ভিউ

স্থান: বান্দরবান বাস স্ট্যান্ড
ভাড়া: ১,৫০০-২,৫০০ টাকা

২। হোটেল হিলটন

স্থান: বান্দরবান বাস স্ট্যান্ড সাথে
ভাড়া: ২,০০০-৩,০০০টাকা

৩। হোটেল প্লাজা

স্থান: বান্দরবান বাস স্ট্যান্ড থেকে ৫ মিনিট দূরে
ভাড়া: ১,৫০০-৩,০০০ টাকা

৪। হোটেল রিভার ভিউ

স্থান: শহরের সাঙ্গু নদীর তীরে
ভাড়া: ১,০০০-২,০০০ টাকা

৫। হোটেল পর্যটন

স্থান: পাহাড় ও লেকের পাশে অবস্থিত(শহর থেকে চার কি: মি: দূরে)
ভাড়া: ১,৩০০-২,৫০০ টাকা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url